বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি।
জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার সংশ্লিষ্ট বিট অফিসের যোগসাজশে বিভিন্ন স্থানে অবাধে পাহাড়ের টিলা কেটে সবজি বাগান ও স্থাপনা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। এমন কর্মযজ্ঞে বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সবুজ প্রকৃতির লীলাভূমি ভারত সীমান্তবর্তী লাগোয়া জামালপুরের বকশিগঞ্জের গারো পাহাড় । যেখানে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্রের অপরূপ লীলাভূমি। প্রায় ১১শত হেক্টর ভূমি জুড়ে উঁচু-নিচু টিলা আর পাহাড়ে ঘেরা বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সম্ভার এই স্থানটি।
অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ডুমুরিতলা বিট অফিসের সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে অবৈধ অর্থ লেনদেনে পাহাড়-টিলা ও গাছ কেঁটে সমতল করে ধান, শিমুল আলুসহ বিভিন্ন সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করেছেন একটি চক্র। ইতিমধ্যেই ৫৪ হেক্টর বন্যভূমি জবর দখলের কবলে পড়েছে। অনেক যায়গায় বসবাসের জন্য সদ্য তৈরি করা হয়েছে স্থাপনা। এতে সরকারি জমি জবর দখলের পাশাপাশি বন ধ্বংসের মুখোমুখি হচ্ছে, অপরদিকে জেলার প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে।
প্রকৃতি ধ্বংসকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে স্থানীয় পিটিশন সাংমা, হায়দার আলী , কৃষক ওমর আলীসহ একাধিক স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিট কর্মকর্তা অবৈধভাবে টাকা নিয়ে গাছ কেটে এই চক্রটিকে চাষাবাদ করতে দিচ্ছে।টাকা দিলে তারা চাষাবাদ শুধু নয়, বাড়ী ঘরও করতে দেয়। একসময় এই গারো পাহাড়ে অনেক কিছু দেখার ছিলো। এদের কার্যকলাপে আজ বনটা ধ্বসের দারপ্রান্তে। ওপর মহলের কর্মকর্তাদের অনেক বার জানিয়েও কোন লাভ হয়নি, তারাও তো এই অবৈধ টাকার একটা হিস্যা নেয়। তারা কি আর ব্যবস্থা নিবে?
বনের বেগুন খেতে পরিচর্যাকারী সামছুল হক বলেন, আমি টেকার (টাকা’র) বিনিময়ে কাজ করছি । তবে আমি যতটুকু জানি, বনের স্যারদের টেকা পয়সা দিয়েই আবাদ ফসল করে। তারা না করবের দিলোতো আবাদ ফসল করবের পাবো না।
তবে সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফার কোন মন্তব্য পাওয়া না গেলেও, চাষাবাদের কথা স্বীকার করে ময়মনসিংহ বন বিভাগের বালিজুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের ডুমুরিতলা বিট অফিসের আওতায় কিছু জমি খালি আছে। সেখানে হয়তো অনেকেই চাষাবাদ করেছে। আমরা বারবার বন্ধ করার চেষ্টা করছি। বন বিভাগ রক্ষার্থে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি যাতে না হয়, সেজন্যই অনেক কিছুই দেখেও, না দেখার ভান করতে হয় আমাদের।
এ বিষয়ে, দায়সারা মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট সহকারী বন সংরক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য ও অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে বন ধ্বংসকারীদের আইনের আওতায় আনাসহ উর্ধতন কতৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন,এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।