রুহুল আমিন, ডিমলা (নীলফামারী)
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ১ নম্বর ডালিয়া বাজারে মনিকা আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য প্রতিবেদক ও স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মী সংবাদ সংগ্রহের জন্য গিয়ে দেখেন জেলা সিভিল সার্জনের ভুয়া স্বাক্ষর, নানা বিস্তার অভিযোগে ভরা।
এ সময় ফ্যাক্টরির মালিক জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার স্যানিটারী ইন্সেপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক ওয়াহেদুল ইসলামকে ফোন দেন, তখন কথার এক পর্যায়ে (সাংবাদিকদের) ওই কর্মকর্তা বলেন, স্যারকে স্যার বলে সম্বোধন করেন। অবশ্যই আপনাকে স্যার বলে সম্বোধন করতে হবে। এরপরেই সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাকা ছাড়া মেডিকেল সার্টিফিকেট ও লাইসেন্স দিয়েছি হয় নাকি?কত টাকা নিছি সেই কৈয়িফত আপনাকে কেন দিবো? আপনি কে? আপনার ক্ষমতা থাকলে নিউজ করেন।
এ ঘটনাটি ঘটেছে, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা খালিশা চাপানী ইউনিয়নের ১ নম্বর ডালিয়া বাজারে সরেজমিনে পরিদর্শন না করে এক আইসক্রিম ব্যবসায়ীকে লাইসেন্স ও মেডিকেল সনদ দিয়েছে স্যানিটারী ইন্সেপেক্টর ও উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক কর্মকর্তা ওয়াহেদুল ইসলাম।
অনুসন্ধ্যানে দেখা যায়, সেখানে জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল মিলেছে। ওই আইসক্রিম ফ্যাক্টরির মালিক টাকার বিনিময়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট ও লাইসেন্স ওই কর্মকর্তার কাছে থেকে নেন। নোংরা পানির ট্যাংকি, আইসক্রিমের ফ্রেম, বিষাক্ত রং মিশ্রিত পানি ফ্যাক্টরিতে প্রক্রিয়া জাত করা হচ্ছে।
সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে গেটে তরিঘড়ি তালা লাগিয়ে পালাচ্ছেন। পরে ডেকে নিয়ে কারখানায় প্রবেশ করলে তিনি একজন কে ফোন ধরিয়ে দেন। ফোনের বিপরীত থেকে তিনি পরিচয় দেন, উপজেলা স্যানিটারী ইন্সেপেক্টর ও উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক কর্মকর্তা ওয়াহেদুল ইসলাম।
ওই কর্মকর্তাকে বলা হয়, আপনি যে মেডিকেল সনদ ও লাইসেন্স দিয়েছেন আগে পরিদর্শন করেছেন কিনা? তিনি বলেন পরিদর্শন কেন করতে হবে? লাইসেন্স লাগে তাই দিয়েছি। কত টাকার বিনিময় এই নোংরা পরিবেশে সনদ দিয়েছেন? সনদ কি এমনি এমনি পাওয়া যায়। অবৈধভাবে কেন টাকা নিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন আমি টাকার বিনিময় মেডিকেল সার্টিফিকেট ও লাইসেন্স দিয়েছি সেই কৈয়িফত কেন আপনাকে দিবো? আপনি কে? পারলে নিউজ করেন। আর স্যারকে স্যার বলে সম্বোধন করেন। অবশ্যই আপনাকে স্যার বলে সম্বোধন করতে হবে। কেন আপনি ভাই বললেন?
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্যার কে টাকা দিয়েছি তিনি আমাকে কাগজ তৈরী করে দিয়েছেন। কিন্তু কি কি কাজ লাগে আমি জানি না। ওনি যে লাইসেন্স দিয়েছে তা দিয়ে চলবে বলে আমি জানি। কারখানা করতে গিয়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে। জানি না কবে টাকা উঠবে?
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান বলেন, মনিকা আইসক্রিম ফ্যাক্টরি নামে কোনো সনদ দিয়েছি কিনা আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিতে হবে। স্ক্যান করা স্বাক্ষরের বিষয়ে বলেন, যদি কেউ জাল করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।