জবি প্রতিনিধি
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব লজ্জাবতী
বানর দিবস ও‘স্লো লোরিস আউটরিচ উইক’উদযাপন করেছে জার্মান ভিত্তিক গবেষ্ণা সংস্থা প্লাম্পলোরিস ই.ভি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল পরিবেশগত শিক্ষা। অর্থাৎ পরিবেশগত শিক্ষার মাধ্যমে কিভাবে লজ্জাবতী বানরদের সংরক্ষণ করা যায়।
বৃহস্পতিবার দিবসটি উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মকবুল আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, ধীরে সাইকেল চালানোর প্রতিযোগিতা এবং শব্দ মেলানোর খেলার আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উদযাপনে সকল কার্যক্রমে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয় এবং সহজেই পরিবেশের সাথে বা মাটির সাথে মিশে যেতে পারে এমন সব উপকরণ ব্যবহার করে সংস্থাটি।
দিবসটি উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের মাঝে লজ্জাবতী বানর সম্পর্কে সচেতনতা এবং লজ্জাবতী বানরের বিষয়ে মজার মজার তথ্য তুলে ধরেন বানর গোত্রীয় প্রাণী গবেষক হাসান আল রাজী। যিনি বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াতে পিএইচডি গবেষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
এর আগে গত১৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ব লজ্জাবতী বানর দিবস উপলক্ষে লাউয়াছড়া বনের আশেপাশে বসবাস করা লোকজনের মাঝে বহেরা গাছের চারা বিতরণ করে প্রতিষ্ঠানটি। এই উদ্ভিদটি একই সাথে মানুষ এবং বন্যপ্রাণী উভয়ের জন্য উপকারী হওয়ায়, বিশেষ করে লজ্জাবতী বানর এই গাছটির উপর অনেক অংশেই নির্ভরশীল হয় এই গাছের চারা বিতরণ করা হয়। এই গাছ থেকে এক ধরনের থকথকে আঠা তৈরি হয় যা লজ্জাবতী বানরের খুবই পছন্দের খাবার।
লজ্জাবতী বানর বা বেঙ্গল স্লো লোরিস বাংলাদেশের একমাত্র নিশাচর বানর গোত্রীয় প্রাণী যাদের দেশের উত্তর এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের বনগুলোতে দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন কারণে এই প্রজাতির সংখ্যা কমে যাওয়ায় এদেরকে বিশ্বব্যাপী বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রাখা হয়েছে।
২০১২ সাল থেকে সকল প্রজাতির লজ্জাবতী পালন সংরক্ষণে Slow Loris Outreach Weএk (SLOW) নামে একটি সপ্তাহ ব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে লজ্জাবতী বানর নিয়ে কাজ করা বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠনগুলো। এর পাশাপাশি ২০১৮ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর থেকে এই দিনটিকে লজ্জাবতী বানর দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর লজ্জাবতী বানর দিবস হিসেবে পালন করার মূল কারণ হলো ২০১৩ সালের এই দিনে সকল লজ্জাবতী বানরকে Cites অ্যাপেন্ডিক্স (i) এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে সকল লজ্জাবতী বানরদের সংরক্ষণের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয় এই দিনটি থেকে। ২০১৭ সাল থেকে Bangladesh slow loris research and conservation project এবং ২০২১ সাল থেকে Plumplorise. V. বাংলাদেশে Slow loris outreach week পালন করে আসছে। তবে এই বছর একই সাথে Slow loris Outreach Week এবং World Slow Loris Day পালন করা হচ্ছে।
এবিষয়ে বানর গোত্রীয় প্রানী গবেষক এবং জার্মানি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্লাম্পলোরিস ই.ভি. এর রিসার্চ এন্ড এনিমেল ফেয়ার কো-অর্ডিনেটর মার্জান মারিয়া বলেন, আমরা বাংলাদেশের লজ্জাবতী বানর গবেষণা এবং সংরক্ষণে গত ২০১৫ সাল থেকে কাজ করে আসছি। বন্যপ্রাণী গবেষক হাসান আল রাজীর হাত ধরে সেটা ছোট পরিসরে শুরু হলেও বর্তমানে আমরা অনেক বড় পরিসরে কাজ করছি। বন বিভাগের সহায়তায় আমরা লজ্জাবতী বানর নিয়ে যে সকল গবেষণা করছি তা পরবর্তীতে লজ্জাবতী বানর সংরক্ষণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর পাশাপাশি যে কোন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরীর কোন বিকল্প নেই তাই আমরা এই ধরনের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম গুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
##