আমাদের অবশ্যই জীবশ্ম জ্বালানীর যুগ শেষ করতে হবে’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে আজ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শুক্রবার কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের কামালপুর বেড়ী বাঁধের সামনে বেসরকারী সংস্থা ‘পিপলস্ ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন-পপি’ পরিচালিত ক্রিয়া প্রকল্পের উদ্যোগে এবং সুইডেন এ্যাম্বেসি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় গ্লোবাল ডে অফ ক্লাইমেট এ্যাকশান ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে এক প্রতিবাদী মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে নিকলী উপজেলা ক্লাইমেট এ্যাকশান গ্রুপ ও ইউথ গ্রুপ ও নারীদলের সদস্যগণসহ এলাকার বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন। উপজেলা ক্লাইমেট এ্যাকশান গ্রুপের সভাপতি জনাব মোঃ আইয়ুব আলীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পপি-ক্রিয়া প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব এস এম রেজাউল হক মামুন, তিনি বলেন আমরাও ন্যায্যতা নিশ্চিত করে জীবাশ্ম জালানী বন্ধ ও নবায়নযোগ্য জালানী ব্যবহারের কথা বলছি। যেহেতু আমাদের গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরনের মাত্রা কম এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভুমিকা নেই, তাই আমরা দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ক্ষতি না করে নবায়নযোগ্য জালানী গ্রহনের পক্ষে। অপরদিকে ধনী দেশ ও যারা শিল্প বিল্পবের পর থেকে ঐতিহাসিকভাবে গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরনে ও জলবায়ু পরিবর্তনে বেশী প্রভাব রাখছে তাদের অতিসত্তর নবায়নযোগ্য জালানী গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি। জীবাশ্ম জালানী থেকে নবায়নযোগ্য জালানী গ্রহনের ক্ষেত্রে ন্যাযতা ও ঐতিহাসিক দায়কে আমলে আনার দাবী জানাচ্ছি। মূল প্রবন্ধ পাঠ শেষে ক্লাইমেট এ্যাকশান কমিটির সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুর রহমান রিপন, সহ-সভাপতি জেসমিন আরা বিউটি, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল কবীর। দামপাড়া ইউনিয়ন ক্লাইমেট এ্যাকশান গ্রুপের সভাপতি মোঃ তাহের আলী মাষ্টার. সাধারন সম্পাদক মোঃ মোবারক হোসেন, কামালপুর নারী দলের সভাপতি আছিয়া বেগম পর্যায়েক্রমে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা সম্প্রতি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলন ২০২৩ এ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জোট গঠনের নতুন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, যা আমাদের মত তৃতীয় বিরেশ্বর দরিদ্র দেশ সমূহ উপকৃত হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন। তারা আরো বলেন জোটের প্রাথমিক লক্ষ্য পেট্রলের সঙ্গে ২০ শতাংশ ‘ইথানল’ মেশানো। এর ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমবে। প্রকৃতি রক্ষায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতা কমিয়ে জৈব জ্বালানির ব্যবহার বাড়বে ফলে প্রকৃতি রক্ষা পাবে। পেট্রল, ডিজেল কিংবা প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমানোর ক্ষেত্রে এই ইথানল যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। সদস্যদেশগুলো আখ উৎপাদন বাড়িয়ে সেই পরিবর্তনে সহায়ক হতে পারবে। ভারত বা বাংলাদেশের মতো দেশের অর্থনীতির জন্য এই জোটবদ্ধতা আরও জরুরি; কারণ, শক্তি পেতে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা এসব দেশে দিন। দিন বেড়ে চলেছে। ইথানল ছাড়াও ভারতে জৈব জ্বালানির আরও কয়েকটি ব্যবস্থার ওপর সরকার জোর দিয়েছে- যেমন গোবর গ্যাস বা কম্পোষ্ট জ্বালানি। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দূষণ মোকাবিলার পাশাপাশি কৃষকদের রোজগারও বাড়বে বলে সরকার মনে করে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে ‘জিরো এমিশন’ লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে জৈব জ্বালানির উৎপাদন ও ব্যবহার ২০৩০ সালের মধ্যে তিন গুণ বাড়াতে হবে। কাজেই সেই লক্ষ্য পূরণে এ পদক্ষেপ একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল জৈব জীবাশ্মের সবচেয়ে বেশি উৎপাদনকারী দেশ। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নত বিশ ১০০ বিলিয়ন ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এই প্রথম সদিচ্ছা প্রকাশ করেছে বলেও বক্তারা মানববন্ধনে উল্লেখ করেন। উন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরন থেকে বিরত থাকার আহবান জানান এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যাবহার, অযথা প্রাকৃতিক নম্পদ বিশেষ করে জ্বালানী হিসেবে কাঠের ব্যাবহার কমাতে এবং পরিবেশ রক্ষায় রেশী করে গাছ লাগানোর আহবান জানান এবং নিজেরা প্রত্যেকেই গাছ লাগানোর অঙ্গিকার করেন। মানববন্ধনে সার্বিক সহায়তা করেন প্রকল্প কর্মী জনাব সেলিনা আক্তার, জনাব সুইটি খাতুন প্রজেক্ট অফিসার জনাব মোঃ শাহীন হায়দার।