গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত ২৯ আগষ্ট ১১ বছর পর আবার চালু করা হয় উত্তরাঞ্চলের তিন জেলার বহুল কাঙ্ক্ষিত রামসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন। কিন্তু ভুল সময় সূচির কারনে উদ্বোধনের দিন থেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করছে যাত্রীরা।
বর্তমান সময় সূচি অনুযায়ী ট্রেনটি ভোর পাঁচটা ত্রিশ মিনিটে গাইবান্ধার বোনারপাড়া রেলওয়ে জংশন থেকে পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (বি মু সি ই) স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তবে ফিরতি পথে গাইবান্ধার বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে রাত দেড়টার থেকে দুইটার পর । রাতে বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রা বিরতি দেওয়ায় এবং গন্তব্য পৌঁছার সময়টি গভীর রাতে হওয়ায় নিরাপত্তা শঙ্কায় ট্রেনটি এড়িয়ে চলছে যাত্রীরা। তাই ফিরতি পথে প্রায় সবগুলো কোচ ফাঁকা থাকে । এতে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়সহ ট্রেনটি চালুর উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে না ।
গাইবান্ধা থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে নিয়মিত যাতায়াতকারী এনজিও কর্মকর্তা মাহবুব মোর্শেদ জানান , ট্রেনটির সময় সূচিটি যাত্রীবান্ধব হয়নি । পার্বতীপুর থেকে আমি যদি রামসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠি তাহলে গাইবান্ধা পৌঁছাতে রাত একটা বেজে যায়। গভীর রাতে স্টেশন থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে কোন দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এই শঙ্কায় বাসে যাতায়াত করছি ।
রংপুর কারমাইকেল কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিনথিয়া সুলতানা মিম বলেন , রামসাগর এক্সপ্রেস রংপুরের শিক্ষার্থীদের জন্য যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করে দেওয়ার কথা ছিল। গাইবান্ধা থেকে সকাল সাড়ে নয়টার মধ্যে ট্রেনটি রংপুরে পৌঁছায় কিন্তু ফিরতি পথে পঞ্চগড় থেকে আসতে প্রায় ১২ টা বাজে আর রংপুর থেকে গাইবান্ধা যেতে প্রায় দুইটা বাজে । একজন ছাত্রীর পক্ষে এই সময়টি কখনো নিরাপদ হতে পারে না। তাই সময় সূচির পরিবর্তন করা উচিত।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্যান’স ফোরাম গাইবান্ধা অঞ্চলের সদস্য সামসুর রহমান রিদয় জানান, ট্রেনটির বর্তমান সময় সূচিতে যাত্রীদের জন্য সুফল বয়ে আনবে না । ট্রেনটি রংপুর থেকে গাইবান্ধা পর্যন্ত প্রায় ফাঁকা চলে আসে। এতে একদিকে যেমন গাইবান্ধা জেলার যাত্রীরা কোন সুবিধা পাচ্ছে না অন্যদিকে রেলওয়ে’র লোকসান গুনতে হবে ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট ডিভিশনের ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ মুঠোফোনে বলেন , যাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে রামসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুনরায় চালু করা হয়। লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন ) ,কোচ ও জনবলসহ নানা সংকটের কারণে আমরা রামসাগর এক্সপ্রেসের জন্য দুইটি ট্রেন (আপ-ডাউন) বরাদ্দ করতে পারছি না , একটি দিয়ে যাত্রীদের সেবা দিতে হচ্ছে । তবে আশা করছি খুব শিঘ্রই যাত্রীবান্ধব একটি সিডিউল হবে ।