ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে এ সফরে যাচ্ছেন তিনি। সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্র এবং সরকারপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। ব্রিকস ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার জোট।
ব্রিকস সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের বিষয়ে রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন জোহানেসবার্গে থাকবেন, তখন অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে তার সাক্ষাতের আয়োজন করব। এখনো সব চূড়ান্ত হয়নি। রাষ্ট্রপ্রধানদের সাক্ষাৎগুলো শেষ মুহূর্তে হয়। তবে অবশ্যই অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে।
এ পর্যন্ত প্রায় ২২টি দেশ ব্রিকসের সদস্য হতে আগ্রহ দেখিয়েছে এবং ৫টি আদি সদস্য দেশ নতুন সদস্য নেওয়ার ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ব্রিকসে যোগদানে বাংলাদেশের সর্বশেষ অবস্থা কী-জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, জেনেভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত দেখা করে বলেছিলেন, তারা ব্রিকসের সদস্যসংখ্যা বাড়াতে চান। বাংলাদেশকেও সদস্য করার চিন্তাভাবনা করছেন। তবে চূড়ান্ত হয়নি।
ড. মোমেন বলেন, এ মুহূর্তে ব্রিকসে নতুন সদস্য নেবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, তারা কী প্রেক্ষাপটে সদস্য নেবেন, কী কী হবে-সেজন্য তারা একটা মোডালিটি (কর্মপদ্ধতি) তৈরি করবেন। এ ব্যাপারে আমরা তাড়াহুড়ো করব না।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে ব্রিকস ব্যাংকে আমরা যোগদান করেছি। ব্রিকস হ্যাভ অ্যা লার্জ অ্যামাউন্ট-তাদের প্রায় পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। এখন যারা আমাদের উন্নয়ন অংশীদার, তাদের অনেকেই ইদানীং খুব একটা সাহায্যে আসছে না। ব্রিকসে অংশগ্রহণ করতে পারলে উন্নয়ন প্রকল্পে সহযোগিতা পাব। আফ্রিকায় আমাদের ভালো সুযোগ রয়েছে, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যে। আফ্রিকার সঙ্গে আমরা সম্পর্ক বাড়াতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটাবেন। তিনি ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিআইডিএ) যৌথ আয়োজনে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী আফ্রিকার দেশগুলোয় থাকা বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতদের আয়োজনে ‘রিজিওনাল এনভয়েস কনফারেন্স’অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
একই দিন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ কয়েকটি ব্রিকস সদস্য দেশের সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যায় ব্রিকসের বর্তমান সভাপতি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৪ আগস্ট নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ব্রিকস এবং ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড দ্য ব্রিকস প্লাস ডায়ালগের নতুন সদস্য হিসাবে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেবেন। ৭০টি দেশের প্রতিনিধিরা এখানে উপস্থিত থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী একই দিন সন্ধ্যায় দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মিলিত হবেন। এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রধান সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসাবে ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড দ্য ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ আগস্ট স্বদেশের উদ্দেশে জোহানেসবার্গ ত্যাগ করবেন।