মো.মাসুম বিল্লাহ,ভালুকা প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার পুরুড়া গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে ডা.মোঃ জহিরুল ইসলাম ৪১ তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে বিসিএস স্বাস্থ্য, সহকারী ডেন্টাল সার্জনে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
ডা. মো: জহিরুল ইসলাম, বিসিএস স্বাস্থ্য (সহকারী ডেন্টাল সার্জন),মেডিকেল কোর্স বি ডি এস (ব্যাচেলর অফ ডেন্টাল সার্জারী)
বর্তমানে কর্মরত আছেন একটি প্রাইভেট চেম্বারে ( আদনান ডেন্টাল কেয়ার,পাতাল মার্কেটের ৩য় তলা,ভালুকা)।
দ্যা মেইল বিডি প্রতিবেদককে উনি জানান- “এই পরিচয় অর্জনের জার্নিটা আমার জন্য খুব সহজ ছিলো না।এটা শুরু হয় মূলত বড় বোনের মাধ্যমে যিনি পরিবারের প্রতি এতই উদার যে,আমি আমার মেজো বোন, ছোট ভাই এমরান হাসানকে তার দুই মেয়ের মতই সন্তানের মতোই যত্ন করে মনুষ করেছেন।যিনি না থাকলে আমার পরিবার কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারতো না।আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাদের এত বড় মনের একজন বোন দিয়েছন।লাখো কোটি শুক্রিয়া। মেজোবোন বিলকিস আক্তারের অপরিসীম সরলতা,সততা, সাহস যোগানি কথা,সবসময় উৎসাহ আর অফুরন্ত সহযোগিতা আমার সাফল্যের অন্যতম কারণ।
আমার একমাত্র আদরের ছোট ভাইয়ের অবদান স্বীকার না করলে অনেক বড় অন্যায় হবে।ছোট ভাই হয়েও যে বড় ভাইয়ের মতো কাঁধে পরিবারের পুরো চাপ নেওয়া যায় এর দৃষ্টান্ত এমরান। অতি আদরের ভাই,অভিমানী কিন্তু অত্যন্ত সজ্জন, দয়ালো,অত্যন্ত ভালোমানুষ, সৎ, সততা ও সত্যবাদিতায় যার তুলনা সে নিজেই।সে শত অভাব অনটনেও কখনো যে কোনো চাহিদায় না করেনি।আমার ভাই এমরান হাসান মন্ডল যে পরিমান ত্যাগ আমার আর আমার পরিবারের জন্য করেছে তা কখনো শোধ করার মতো না।দোয়াকরি আমার ভাই যেনো তার মনের মতোই অনেক বড় হয়।আমার বড় দুই বোন,ছোট ভাই আমাকে কখনোই পরিবারের অভাব অনটনের কথা বুঝতে দেননি।আল্লাহ তাদের মঙ্গল করুন এই দোয়া করি।
বোন আছমা আক্তার, মেজোবোন বিলকিস আক্তারের পড়াশোনা ও বাবার শিক্ষার প্রতি প্রচুর অনুরাগ থেকে আমার শিক্ষাজীবন শুরু।আমার বাবাই আমার প্রথম এবং প্রধান অনুপ্রেরণাদাতা। উনার অনুপ্রেরণা ও ইচ্ছায় আমি আমার শিক্ষা জীবন শুরু করি নারাঙ্গি পাড়া আব্দুল আলী একাডেমি প্রাইমারী স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির মধ্য দিয়ে।এখানে বলে রাখা ভালো আমার বাবা একজন কৃষক, নিরক্ষর কিন্তু সামাজিকভাবে শিক্ষানুরাগী,শিক্ষিত ও সচেতন একজন মানুষ। প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির পর সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা পাই আমার শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার ম্যাডামের কাছে,উনি সম্পর্কে আমার চাচি হন।উনার সম্পূর্ণ তত্ত্বাবধানে ও আগ্রহে আমি পড়াশোনায় প্রথম থেকেই ভালো করতে থাকি।পরবর্তিতে কেবল চতুর্থ শ্রেণিতে ২য় হয়।বাকী সব শ্রেণিতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১ম হয়। এরমধ্যেই ৮ম শ্রেণিতে ভালুকাতে টেলেন্টপুলে বৃত্তি পায়। যেখানে ছেলেদের মধ্যে ৪র্থ হয়।হাইস্কুল জীবনে প্রথম দিকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা পায় আশরাফুন্নাহার লিলি ম্যাডামের কাছে।পরবর্তিতে কামরুজ্জামান স্যার, প্রয়াত দুলাল উদ্দিন মোল্লা স্যার, জামান স্যার, প্রয়াত হাসমত স্যার,শামিম স্যারদের অনুপ্রেরণা ও গাইডলাইন পেয়ে এগিয়ে যাই। ভরাডোবা উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসিতে ২০০৯ সালে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।পরে সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ,ময়মনসিংহে ভর্তি হয় ২০০৯ সালে।এখানে আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দেয় পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক কবির স্যার,মিজান,স্যার,টুটুল স্যার,প্রয়াত আসিফ স্যারদের থেকে।২০১১ সালে আমি সকল বিষয়ে A+ পেয়ে কৃতকার্য হয়।শুরুহয় ভর্তিযুদ্ধ।প্রথম ও দ্বিতীয় বার ডেন্টালে চান্স হয়।বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮১ তম হয়েও একান্ত মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছা থেকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ডেন্টালে ভর্তি হয় ২০১৩ সালে।ইন্টার্নি সহ মেডিকেল পার্ট শেষ করি ২০২০ সালের আগস্টে। শুরু হয় বিসিএস জার্নি।দীর্ঘ চার বছরের প্রিপারেশনে টানা চারটি বিসিএসে প্রিলিতে কৃতকার্য হয়।৪১ তম বিসিএস ছিলো আমার প্রথম বিসিএস, ১ম চাকুরি পরীক্ষা। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ কৃপায় সফল হয়।এছাড়াও ৪৩ ও ৪৪ লিখিত দিয়েছি।৪৫ লিখিত দিবো ইনশাআল্লাহ । আমার স্বপ্ন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হওয়া।ইনশাআল্লাহ স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আমার জার্নি অব্যাহত থাকবে। আরেকটি ইচ্ছে হলো অন্য ক্যাডারে শিফট করলেও আমি আমার অর্জিত জ্ঞান আজীবন প্রয়োগ করে যাবো অবসরকালিন ডেন্টাল সেবার মাধ্যমে। নতুনদের জন্য পরামর্শ, সঠিক গাইডলাইন, মেধা, ত্যাগ, প্রচুর পরিশ্রম করলেই কেবল ইনশাআল্লাহ অবশেষে সফলতা আসবে। প্রথম থেকেই প্রচুর বেসিক তথ্য অর্জন ও এনালাইসিস করে পড়ি। যা পরবর্তীতে সবকিছুই সহজ করে দেয়। লক্ষ্য ও স্বপ্ন স্থির করে সঠিক একসেট বিসিএস রেফারেন্স গাইড ভালোভাবে বারবার রিভিশন,প্রচুর বিগত সালের প্রশ্ন সলভ,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আপডেট তথ্য সংগ্রহ করা।সর্বোপরি প্রচুর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ই আমার সাফল্যের অন্যতম প্রধান কারণ।
কৃতজ্ঞতায় বাবা মা,আমার সকল শিক্ষকবৃন্দ,ভাই বোন বিশেষভাবে বড়বোন আছমা আক্তার। যার একান্ত আর্থিক ও মানসিক সহযোগিতা আমার সফলতার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। আমার স্ত্রী ( মাহফুজা আক্তার নাদিরা) যার অফুরন্ত সহযোগিতা ও ত্যাগ,অনুপ্রেরণা সর্বোপরি অশেষ ভালেবাসা আমাকে সবসময় স্বপ্নজয়ের কঠিন ও বন্ধুর ধাপগুলো পার হতে সাহায্য করেছে। আরোও কৃতজ্ঞতা জানাই প্রয়াত রিনা ম্যাডাম,শাহিনা ম্যাডাম,শামসুন্নাহার, খাদিজা ম্যাম।কালাম, মৌলভি স্যার,রফিক স্যার।
তাহমিনা ম্যাম,ফাহিমা ম্যাম,রাজু স্যার,পান্না স্যার,আজিজ স্যার,পোদ্দার, নাসিম স্যার সার,শিপন ম্যাডাম, মুনসর স্যার, এমিলি ম্যাডাম, সামদানি স্যার, শরিফ সার।
প্রিয় শরিফুল ইসলাম ( বিএডিসি অফিসার) কাকার উৎসাহ, পরামর্শ, সহযোগিতা স্মরণ করার মতো।
এলাকার বা পরিচিত সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি অসংখ্য কৃতজ্ঞতা পেশ করছি।
কৃতজ্ঞতা জানাই আমার দুই দুলাভাই, মোঃ বাবুল মন্ডল, মোঃ হাফিজুল ইসলাম ভাইদের অবদান অনস্বীকার্য,উনারা আমাদেরকে সবসময় নিজের ভাই মনে করেন।যে কোনো আবদার কখনো ফেলে দেননি। বড়ভাই নাই কিন্তু ওনার সে অভাব বুঝতে দেননি।
আমার দুই ভাগনি নাজমুন্নাহার বিথি আফিয়া মাসুমা,একমাত্র ভাগ্নে সিজান মাহমুদ আমার উদ্দীপনার অন্যতম উৎস।আমার ৫ কাকা,কাকি বিশেষ করে আলাল উদ্দিন কাকা,মফিজ উদ্দিন কাকা,জালাল উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন ও কাজিম উদ্দিন কাকাদের উৎসাহ আর সহযোগিতা স্বীকার না করলে অন্যায় হবে।মামা বিশেষ করে নবি হোসেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমার শাশুড়ি মা,নানি শাশুড়ী, নাসরিন আন্টি সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন।
চাচাত ভাই ইমামুল ইসলাম,বড় ভাই মনিরুল ইসলাম অনেকভাবেই সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়েছে। ফুফাতো ভাই প্রয়াত প্রিয় মুস্তফা ভাই নুর ইসলাম,সাত্তার ভাই,মুসলেম ভাই।
আমার বন্ধু শরীফ,মাসুদ,খাদিমুল( শিক্ষা ক্যাডার),ছোটভাই মাহাবুল,জিমন, প্রিন্স, জান্নাত, বন্ধু ডা: মো: জুনায়েদ হোসেন, রাজিব,আমিনুল,আজাহার,আজিজুল,মামুন।
সাইদ ভাই,সুহেল ভাই,মুক্তার ভাই অল্পদিনে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন,অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা।
ছোট ভাই প্রিয় নাইম মন্ডল টিটু,প্রিয় শ্যালিকা মাহেজাবিন ইসলাম নিজুম,জাহিদ হাসান পাঠান, পলাশ, জজ মিয়া,রতন,বিপুল,মিশু।
প্রিয় নাজমুল কাকা,সামাদ দাদা,ইমান কাকা,মাসুম কাকা।ইত্যাদি
বন্ধু প্রিন্স,তুহিন মামা, জহিরুল ইসলাম মামা। মজনু,মুস্তাফিজ, সুমিত,আশরাফুল, জাহাঙ্গীর। জসিমউদদীন খান কাকার একান্ত উৎসাহ, উদ্দীপনা, স্নেহ,সহযোগিতা অনস্বীকার্য।
বড় ভাই রাকিব ভাই,উপল ভাই,অচিন্ত্য দ্যা,শুভজিৎ দ্যা,অভ্র দ্যা,সৌরভ দ্যা,প্রিয় ইসলাম ভাই।
সহ অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীই আমাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সকলেই আমাকে আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় রাখবেন আমি যেন আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব, কর্তব্য, সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করতে পারি এবং বাংলাদেশের মানুষের সেবায় নিজের মেধা পরিশ্রম উৎসর্গ করতে পারি। সেবাই হোক আমার একমাত্র ব্রত।”