আমরা প্রায় সবাই আসক্ত,কেউ অনলাইনে,কেউ অফলাইনে,কেউ খেলাধুলায়,কেউ ভালোবাসায়।প্রায় সকলেরই কোনো না কোনো বিষয়ে আসক্তি রয়েছে,এই আসক্তিকে জয় করতে পারলেই কেবল মুক্তি।
যে কোনো বিষয়ের প্রতি আসক্তির মাত্রা ঠিক ততটুকুই হওয়া উচিত,যতটুকু আসক্তি আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে।স্কুল,কলেজ এমনকি প্রাইমারি স্কুল পড়ুয়া ছোট ছেলেরাও ফ্রি ফ্রায়ার,পাবজির মতো অনলাইন গেইমে চরমভাবে আসক্ত। এই আসক্তির মাত্রা এতটাই তীব্র যা মাদকাসক্তির চেয়েও কোনো অংশ কম বলে মনে হয় না।
ফ্রি ফ্রায়ার অনলাইন গেইমে চরমভাবে আসক্ত এক যুবককে জিক্ষেস করেছিলাম, একটানা কতক্ষণ খেলাও?ছেলেটা গর্বের সহিত উত্তর দিয়েছিলো,ভাই রাত ১২টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত,একটানা খেলার রেকর্ড আছে।কৌতূহল নিয়ে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম এমনটা কতবার খেলেছো,সে বললো বেশ কয়েকবার। যে বয়সটায় মেধা-মনন,সৃষ্টিশীলতা বিকাশের সময়, সেই সময়টাই প্রায় অধিকাংশ সময় স্বাভাবিক কার্যক্রম পড়াশুনা প্রায় সবকিছু বাদ দিয়ে ছোট্ট একটা মোবাইল ফোনের ডিভাইসে নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছে।
ফলশ্রুতিতে,মেধার স্বাভাবিক বিকাশ না ঘটে মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে।নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে।আমাদের সময় যখন স্কুল,কলেজ এ পড়তাম তখন মনে আছে সকাল থেকে শুরু করে বিকাল পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রম ছিলো পড়াশোনা। আর বিকাল বেলা মাঠে অল্প সময় ফুটবল,ক্রিকেট খেলে,সন্ধ্যার আগেই খেলা শেষ করে,যে যার মত বাড়িতে গিয়ে সন্ধ্যা হতে মধ্য রাত অবধি পড়াশুনা করে স্কুল-কলেজের পড়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়তাম।রাতে রাস্তা-ঘাটে,দোকানে,মাঠে আড্ডা দেওয়া ভাবাই যেতো না।আর বর্তমানের তরুনরা অনলাইনে ফ্রি ফ্রায়ার,পাবজি, টিক টক ইত্যাদিতে আসক্ত হয়ে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
ওদের নিয়ন্ত্রণ ওদের কাছে নাই,ওদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে ফ্রি ফ্রায়ার,পাবজি ইত্যাদি অনলাইন গেইম।
এ বিষয়ে যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি অনতিবিলম্বে এসব অনলাইন গেইম বন্ধ করে, তরুনদের সুস্থ স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা হোক।অন্যথায় আল্লাহ না করুক,অদূর ভবিষ্যতে এ জাতির চরম মূল্য দিতে হবে।
লেখকঃ-
মোঃমাসুম বিল্লাহ,বিবিএ,এমবিএ
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।