নিজস্ব প্রতিবেদক –
নোয়াখালী কবির হাট উপজেলার চাপরাশি হাট ইউনিয়ন। চাপরাশি হাট এ রব.ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ উঠে এসেছে।
বর্তমানে মাদ্রাসায় শ্রেণীকক্ষের ব্যাপক সংকট রয়েছে, এবতেদায়ী ১ম শ্রেণী থেকে দাখিল ৭ম পর্যন্ত ক্লাস গুলো মাদ্রাসা মাঠের টিনসেট মার্কেটের টিনসেট ও মসজিদরে তাদের টিনসেটে নেওয়া হচ্ছে। প্রচন্ড গরমের মধ্যে ছোট ছোট কক্ষের মাঝে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। যেখানে লেখাপড়ার কোন পরিবেশ নেই।
মাদ্রাসার লাইব্রেরী কার্যক্রম নেই বললে চলে। অত্র মাদ্রাসায় আলিম পর্যন্ত বিজ্ঞান বিভাগ চালু আছে। অথচ বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীদের কোন প্যাকটিক্যাল ক্লাস হয় না। একটা সাইন্স বিল্ডিং আছে, কিন্তু সেটা ১০/১২ বছর ধরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। বর্তমান যুগে কম্পিউটারের যুগ বলে। অথচ অত্র মাদ্রাসায় কোন কম্পিউটার ল্যাব নেই। নানান হিসাবে পাওয়া যায় ২টি ল্যাপটপ এর একটি অধ্যক্ষের বাসায়, অন্যটি কম্পিউটার শিক্ষকের বাসায় থাকে। মাদ্রাসার অভ্যন্তরীন পরীক্ষা গুলোর প্রশ্ন নিজেরা প্রস্তুত না করে প্রকাশনী থেকে প্রশ্ন এনে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সরকারী ভাবে পাওয়া ব্যাকরণ ও আরবী ২য় পত্র ক্লাসে পড়ানো হয় না। তিনি বারাকা নামের অখ্যাত প্রকাশনী থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের দেওয়া চওড়া দামের নোট, গাইড, গ্রামার, ব্যাকরণ, আরবী ২য় পত্রগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের কিনতে বাধ্য করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীরাও কিনতে বাধ্য হয়, কারন এসব বইয়ের পৃষ্ঠা উল্লেখ করে সিলেবাস এবং পরীক্ষার প্রশ্ন করা হয়।
স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলে জানা যায় বিগত কয়েক বছরে মাদ্রাসায় উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি, অথচ শ্রেণীকক্ষের তীব্র সংকটে ছাত্র/ছাত্রীরা মসজিদের ছাদে, এমনকি মসজিদের ভিতরে পর্যন্ত ক্লাস করে। সরেজমিনে দেখা যায়।
এই বিষয় উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি, সেশন ফি, মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফি, ফর্ম ফিল-আপ, রেজিঃ ফি, মাদ্রাসা মার্কেটে দোকান ভাড়া বাবদ বছরে ৫০ লক্ষ টাকার অধিক আয় হলেও মাদ্রাসার দুইটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে
উল্লেখযোগ্য কোনো অর্থ জমা নেই।
শ্রেণী শিক্ষকদের কালেকশনের অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে অধ্যক্ষ নিজে টাকা নিয়ে চলে যায়, তারপর জাল ভাউচার বানিয়ে সেই টাকাকে হালাল করা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্থ সরাসরি ব্যাংকে জমা দেয়ার সরকারি বিধান থাকলেও, অধ্যক্ষ এ. টি. এম ইফতেখারুল ইসলাম ব্যাংকে টাকা জমা দেন না। অনিয়ম ও দুর্নীতিতে অধ্যক্ষের অন্যতম সহযোগী আরবী শিক্ষক তাজুল ইসলাম ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রভাষক মেসবাহ উদ্দিন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রশিদ বই কারচুপি ও রশিদ বিহীন লেনদেন এর মাধ্যমে ২০২২ সালে শুধু ৯ম ও ১০ম শ্রেণীতে ১০ লক্ষ টাকার অধিক আত্মসাৎ হয়েছে। মাদ্রাসা মার্কেটের দোকানের সিকিউরিটি বাবদ ১২ লক্ষ টাকা ও দোকান ভাড়া বাবদ সাড়ে ৩ লক্ষ টাকারও কোনো হদিস নেই । বিভিন্ন দাতা সদস্যদের অনুদানের লক্ষ লক্ষ টাকা মাদ্রাসার ফান্ডে জমা না দিয়ে সরাসরি আত্মসাৎ করেছেন বলে জানান তারা।
এই বিষয়ে অধ্যক্ষ এ. টি. এম ইফতেখারুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বর্তমানে অডিট চলমান আমি কিছু বলতে পারবে না, অডিট শেষে বলা যাবে।
এই বিষয় জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না মাহমুদ বলেন লিখিত অভিযোগ ফেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।