রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪

নদীর টাটকা ইলিশ, চিনবেন যেভাবে

যা যা মিস করেছেন

বাঙালি মানেই মাছে-ভাতে। আর এই মাছ যদি হয় ইলিশ, তবে তো এর প্রতি বাঙালির পক্ষপাতিত্ব সার্বজনীন। জিভে পানি আনা গন্ধে-স্বাদে অতুলনীয় এই মাছ বাঙালির গর্ব। ধোঁয়া উঠা গরম ভাতে ইলিশ ভাজা না হলে নাকি বাঙালির বর্ষাকালটা ঠিক জমে না। শুধু ইলিশ ভাজাই নয়! ইলিশ দোপেঁয়াজা, ইলিশ পাতুরি, ইলিশ ভাঁপা, সর্ষে ইলিশ, দই ইলিশ, ইলিশের পোলাও থেকে শুরু করে বেগুন, আলু দিয়ে ইলিশের ঝোল কিংবা উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত জ্বাল দেওয়া ইলিশ- সবই পরম সমাদরে ঠাঁই পায় ভোজনরসিক বাঙালির পাতে।

ইলিশ মাছ বাংলাদেশ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু ইলিশ কেনা নিয়েও আছে নানা ধন্দ। ইলিশ কিনতে ঢাকা বা দেশের যে কোনও বাজারে যান, প্রথম কথাই শুনবেন ‘পদ্মার ইলিশ নিয়ে যান’ বা ‘নদীর ইলিশ নিয়ে যান’। এটা ঠিক যে সাগরের ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে নদীতে আসে এবং নদীর ইলিশ খেতেও সুস্বাদু হয়। কিন্তু বিক্রেতার কথায় বিশ্বাস করে সব ইলিশকেই তো নদীর ইলিশ মনে করলে হবে না। আর সাগরের ইলিশও যে খাওয়া নিষেধ তা তো আর নয়।
তাই বাজারে ইলিশ কিনতে যাওয়ার আগে আসুন ইলিশ মাছ চেনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জেনে নেই। নদীর ইলিশ ও সাগরের ইলিশ চেনা বিষয়ে পাঠকদের উদেশ্যে জানিয়েছেন, মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের ইলিশ বিষয়ক গবেষক।
নদীর ইলিশ কেন আলাদা?

সাগর থেকে ইলিশ যখন ডিম ছাড়ার জন্য নদীতে অর্থাৎ উজানে আসে তখন ইলিশ নদীর প্ল্যাংটন বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী খায়। আর এই খাদ্যের কারণে ইলিশের শরীরে এক ধরণের চর্বি জমে, যা তার স্বাদ ও আকৃতিকে সাগরের ইলিশের চেয়ে আলাদা করে। পদ্মা-মেঘনা অববাহিকায় মাছের খাবার ও পানির প্রবাহের মাত্রার তারতম্যে এই অঞ্চলে পাওয়া ইলিশের স্বাদ বিশ্বের যে কোনও অঞ্চলের তুলনায় আলাদা। ঠিক এই কারণেই চাঁদপুরের ইলিশ জনপ্রিয়, কারণ সমুদ্র থেকে এ এলাকায় আসার সময় নদীর জলজ উদ্ভিদ খাওয়ায় ও পানির ধরনের প্রভাবে মাছের দেহে বিশেষ ধরণের চর্বি তৈরি হয়।

লোনা পানি ও মিঠা পানিতে বসবাসের কারণেও ইলিশের স্বাদে কিছুটা পার্থক্য হয়। আর সেক্ষেত্রে নদীর ইলিশের স্বাদই বেশি হয়। ডিম ছাড়ার আগ পর্যন্ত ইলিশের স্বাদ বেশি থাকে। ডিমওয়ালা ইলিশে মাছের পেট পাতলা হয়ে যায় এবং চর্বি কমে যায়। এ কারণে স্বাদ কমে যায়।

ভালো ইলিশ কীভাবে চিনবেন?
রং
সাগরের ইলিশ ফ্যাকাশে রূপালি আর মাছের চোখের চারপাশ কালচে লাল হয়। আর হিমায়িত সমুদ্রের ইলিশের রং অনুজ্জ্বল, ফ্যাকাশে ধরনের হয়। অন্যদিকে নদীর ইলিশ চকচকে, উজ্জ্বল রূপালি। বিশেষ করে পদ্মা আর মেঘনার ইলিশের রং উজ্জ্বল রূপালি রঙের হয়। ইলিশ মাছ অনেক দূরে পাড়ি দিলে বিশেষ করে মৌসুমের শেষের দিকে পদ্মার ইলিশের পেট ও লেজে হালকা হলুদ সোনালি রঙও দেখা যায়।

গড়ন
সাগরের ইলিশ সরু ও লম্বাটে হলেও নদীর ইলিশ কিছুটা মোটা ও চওড়া হয়। মাথা হয় গোল, লেজ ও পেট মোটা এবং পুরু হয়। কিন্তু সমুদ্রের ইলিশের পেটের দিকটা সরু হয়। সাগরের ইলিশ লেজ থেকে পেটের কাছাকাছি সুষমভাবে লম্বা থাকে অপরদিকে নদীর ইলিশের লেজের একটু উপর থেকেই মাছটা গোল হতে শুরু করে। একটা কথা প্রচলিত আছে, যে ইলিশের মুখ যত সরু তার স্বাদ তত বেশি।

বৈশিষ্ট্য
তাজা ইলিশ শক্ত, টানটান ও অল্প বাঁকা হয়ে থাকে। ইলিশের চোখ হয় স্বচ্ছ আর উজ্জ্বল। কানকো হয় টকটকে লাল রঙের। হিমায়িত বাসি ইলিশ নরম হয়। ইলিশের চোখ ঘোলাটে হয় আর ভেতরের দিকে ঢুকে থাকে। কানকো হয় বাদামি বা কালচে রঙের। এই ইলিশ হাতে নিয়ে পেটের কাছে ধরে ঝুলালে মাথা ও লেজ হেলে পড়ে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

সর্বশেষ

Exit mobile version
x
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.