মোঃনাজমুল হোসেন বিজয়।
বরগুনা জেলা প্রতিনিধিঃ
যে কেউ পানিতে ডুবে যেতে পারি , সবাই মিলে প্রতিরোধ করি” এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বরগুনার তালতলীতে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) পরিচালিত প্রজেক্ট ভাসা-২ এর কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিক দের সাথে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তালতলী ফিল্ড অফিসের আয়োজনে ২৪ জুলাই সোমবার সকাল ১০ টায় প্রজেক্ট ভাসার হলরুমে,প্রেসক্লাবের সভাপতি আ.মোতালেব এর সভাপতিত্ব মতবিনিময় সভায় ২৫ শে জুলাই পানিতে ডুবা দিবস সম্পর্কে আলোচনা করেন সিআইপিআরবি এর ফিল্ড টিম ম্যানেজার মোতাহের হোসেন এবং প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন এরিয়া কো-অর্ডিনেটর দিপিকা দাস। এ সময় উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
সভায় মূল আলোচক হিসাবে প্রজেক্ট ভাসা-২ এর সিআইপিআরবি এর ফিল্ড টিম ম্যানেজার মোতাহের হোসেন প্রজেক্ট ভাসা-২ এর পটভূমি, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বাস্তবায়ন কৌশল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা প্রদান করেন। এরিয়া কো-অর্ডিনেটর দিপিকা দাস এর
উপস্থাপনায় বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে পানিতে ডুবে যাওয়ার পরিসংখ্যানসহ আন্তর্জাতিক অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি দেশীয় প্রেক্ষাপটে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে প্রজেক্ট ভাসার কর্ম-কৌশলগুলোর কার্যকারিতা ব্যখ্যা করেন।
পানিতে ডুবা প্রতিরোধে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নীতিমালা গ্রহণ ও যথাযথ বাস্তবায়ন হলে বরিশাল বিভাগ তথা বাংলাদেশে পানিতে ডুবে মৃত্যু বিশেষ করে শিশু মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব হবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তালতলী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নাসির উদ্দীন । সাংবাদিক দের বিভিন্ন প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে প্রজেক্ট ভাসা এর অর্জনসমূহ এবং ভাসা-২ কর্মপরিকল্পনা, শিশুদের পানিতে ডুবা সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিসংখ্যান প্রতিরোধ বিষয়ক বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে জানতে পেরে উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আশ্বস্ত করেন যে, আগামীতে প্রকল্পের ইভেন্ট পরিদর্শন করবেন এবং নিয়মিত প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অংশগুলো সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করে পানিতে ডুবা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করবেন।
পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হিসাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বরিশাল জেলা। এই বরিশালেরই দুই জেলা পটুয়াখালী ও বরগুনার তিন উপজেলা- কলাপাড়া, তালতলী ও বেতাগীতে ২০১৬ সাল থেকে ‘ভাসা’ নামের একটি প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে সিআইপিআরবি। যার মাধ্যমে ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক তত্তাবধান ও প্রারম্ভিক বিকাশের জন্য ‘আঁচল’ এবং ৬-১০ বছর বয়সের শিশুদের সাঁতার শেখানোর কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ভাসা-১ প্রকল্প শেষের পর দেখা গেছে, এই উদ্যোগের ফলে প্রকল্প এলাকায় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার প্রায় ৫৩ শতাংশ কমেছে। গতবছর তালতলীতে পানিতে ডুবে ১৮ জন শিশু মৃত্যু বরন করেন চলতি বছরে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ৫ জন শিশু পানিতে ডুবে মৃত্যু বরন করেছে।
বিশ্বজুড়ে পানিতে ডুবে মৃত্যুকে ‘নীরব মহামারী’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এই বাস্তবতায়, ২০২১সালের ২৮ এপ্রিল জাতিসংঘের ৭৫তম জেনারেল এসেম্বেলিতে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের যৌথ প্রস্তাবনায় ২৫শে জুলাইকে আন্তর্জাতিক পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়।