বলিপাড়ার কোনও অনুষ্ঠান হোক বা বড় পর্দার ছবি— সালমান খান রয়েছেন অথচ তাঁর হাতে নীল রঙের ব্রেসলেট নেই, তা হতে পারে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্রেসলেটটি যেন বলি অভিনেতার ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ হয়ে দাঁড়ায়।
সালমানের ছবিতে কোনও না কোনও দৃশ্যে তাঁর ব্রেসলেটের দিকেও আলাদা ভাবে নজর কাড়ে ক্যামেরার চোখ। পাশাপাশি সালমানের অনুরাগীরাও অভিনেতার প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা উজাড় করতে একই রকম ব্রেসলেট বানিয়ে পরেও থাকেন।
কিন্তু নীল রঙের ব্রেসলেটের কী বিশেষত্ব রয়েছে, তা জানেন কি? কেনই বা সালমান এই ব্রেসলেটটি হাতছাড়া করতে চান না? এমনকি ভেঙে গেলেও বার বার একই ডিজ়াইনের ব্রেসলেট বানিয়েছেন তিনি। তার কারণও প্রকাশ্যে জানালেন অভিনেতা নিজেই।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি পুরনো ভিডিয়ো ঘুরপাক খাচ্ছে। সেই ভিডিয়োতে দেখা যায়, সালমানের কাছে তাঁর এক অনুরাগী ব্রেসলেট সংক্রান্ত প্রশ্ন রেখেছেন। অভিনেতার হাতে কেন সব সময় একই রঙের ব্রেসলেট দেখা যায় এবং এই ব্রেসলেটের বিশেষত্ব কী, তা সালমানের কাছে জানতে চান ওই অনুরাগী।
সালমান জানান, এই ধরনের নীল পাথর দেওয়া ব্রেসলেট তিনি ছোট থেকেই তাঁর বাবা সেলিম খানকে পরতে দেখেছিলেন। সেলিম নাকি অধিকাংশ সময় সেই ব্রেসলেটটি পরে থাকতেন।
সালমান বলেন, ‘‘বাচ্চাদের যেমন স্বভাব থাকে হাতের কাছে কিছু পেলেই তা নিয়ে খেলা শুরু করা, আমিও ছোটবেলায় সে রকম করতাম। কিন্তু আমার কাছে খেলার জিনিস বলতে ছিল বাবার হাতের সেই ব্রেসলেট।’’
সালমানের বক্তব্য, তাঁর হাবভাব দেখে সেলিম বুঝতে পেরেছিলেন যে ব্রেসলেটটি পছন্দ হয়েছে সালমানের। তাই নিজে থেকেই সালমানকে ব্রেসলেটটি উপহার দেন সেলিম।
সালমান যখন অভিনয়জগতে তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তখনই নীল পাথরের ব্রেসলেটটি অভিনেতাকে উপহার দেন সেলিম।
নীল রঙের ব্রেসলেটটি যে সাধারণ নয় তা-ও জানাতে বাদ রাখেননি সালমান। সালমান জানান, এই ব্রেসলেটের মধ্যে নীল রঙের যে পাথর রয়েছে, তার বিশেষ ভূমিকা আছে অভিনেতার জীবনে। তিনি জানান, নীল রঙের পাথরটির নাম ‘ফিরোজা’ পাথর। এই পাথরের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে বলেই তা দিয়ে ব্রেসলেট তৈরি করেছেন সালমান।
সালমানের ব্রেসলেটে ব্যবহৃত পাথরটি ‘টারকোয়েস’ নামেও পরিচিত। সলমন বলেন, ‘‘আমার জীবনে যদি কখনও নেতিবাচক ভাব প্রবেশ করতে চায়, তা হলে বাধা দেবে এই পাথর।’’
সালমান জানান, ব্রেসলেটের পাথরের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে ‘নেগেটিভিটি’ বা নেতিবাচকতাকে আটকে ফেলার। এমনকি পাথরের মধ্যে শিরার মতো ডিজাইন করা রয়েছে, যার মধ্যে দিয়ে এই নেতিবাচকতা ভেঙে ছড়িয়ে যায় পাথরের মধ্যে এবং সেই সময়েই পাথরটি নিজে থেকে ভেঙে যায় বলে দাবি করেন সালমান।
সালমান জানান, ব্রেসলেটে বর্তমানে যে পাথরটি রয়েছে, সেটি সপ্তম পাথর।
‘ফিরোজা’ পাথর বা রত্নের অন্যান্য গুণাগুণও রয়েছে বলে অনেকে দাবি করেন। জীবন সুন্দর মুহূর্তে ভরিয়ে তোলার পাশাপাশি এই পাথর মানসিক অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।
দিনের যে কোনও সময়ে ‘ফিরোজা’ পাথর ধারণ করা যায় না বলে দাবি করেন অনেকে। তাঁদের মতে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে এই পাথর ধারণ করলে সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়।
সাধারণত তামা এবং অ্যালুমিনিয়াম মিশিয়ে তৈরি করা হয় ‘ফিরোজা’। এই পাথর ধারণ করলে তা জীবনের সকল চক্রের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, রত্নধারণকারীকে সমস্ত রকম বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে। এমনকি একাংশের অনুমান, স্বাস্থ্যবান শরীরী গঠন অর্জন করতেও সাহায্য করে এই ‘ফিরোজা’ পাথর।