কে এম নুর মোহাম্মদ
কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও প্রতি মাসে বিনামুল্যে ৩০ কেজি চাল ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ পেয়েছে দুই রোহিঙ্গা পরিবার। টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকায় দুই রোহিঙ্গা সুকৌশলে উপহারের ঘর হাতিয়ে নিয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা ভূমি অফিসের তালিকা সূত্রে জানা যায়, উলা মিয়ার পুত্র সৈয়দ আলম ও নুর মোহাম্মদের পুত্র ছিদ্দিক আহমদ নামে দুইজন রোহিঙ্গাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব রোহিঙ্গারা উপহারের ঘরে বসবাসও করছেন। এই রোহিঙ্গারা গোপনে বাংলাদেশি এনআইডি কার্ড তৈরি করে ভূমি অফিসে জমা দিয়েছেন। নিজের নামে উপহারের ঘরও হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। দুই বছর আগেই এই দুই রোহিঙ্গাদের নামে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু উপহারের ঘর পেয়েছে তা নয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্রণালয়ের আওতাভুক্ত ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট সহায়তার বিনামূল্যে ৩০ কেজি চালের তালিকায়ও তাদের নাম রয়েছে।
জানতে চাইলে রোহিঙ্গা ছিদ্দিক আহমদ দাবি করেছেন, তারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে একেবারে চলে এসেছে ১৭ থেকে ১৮ বছর আগে। তবে তিনি টেকনাফে নয়, চকরিয়ার ঠিকানা ব্যবহার করেই বাংলাদেশি এনআইডি কার্ড করেছেন। অপর রোহিঙ্গা ছৈয়দ আলম প্রকাশ লালাইক্কার কাছে জানতে চাইলে, তারা অনেক আগেই মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছে। সেই সাথে হ্নীলা ইউনিয়নের জন্ম সনদ নিয়েছেন।
কয়েকদিন আগে ছৈয়দ আলমের দুই নাতির জন্মসনদ করার জন্য হ্নীলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বেলাল উদ্দিন মেম্বারের কাছে স্বাক্ষর নিতে গিয়ে ‘রোহিঙ্গা’ বিষয়টি উঠে আসে। তখন ছৈয়দ আলমের পরিবারও যে রোহিঙ্গা নাগরিক, তা মেম্বারের নিকট স্বীকারোক্তিও দেন। এতে রোহিঙ্গা বিষয়টি প্রমাণিত হয়ে যায়। পরে ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন এই রোহিঙ্গা পরিবারের জন্ম সনদ বাতিল করার জন্য হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বরাবর আবেদন করেন।
স্থানীয় মেম্বার বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে বসবাসরত ছিদ্দিক আহমদ ও ছৈয়দ আলম প্রকাশ লালাইক্কা যে রোহিঙ্গা সেটা নিজেরাও আমার কাছে স্বীকার করেছে। এতে রোহিঙ্গা বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ে যায়। এ জন্য তাদের জন্মসনদ বাতিল করার জন্য চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছি’।
হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, ‘কিভাবে রোহিঙ্গারা মুজিববর্ষের ঘর পেয়েছে তা আমার জানা নেই।’
টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান বলেন, ‘এটা আমার আগের মেয়াদের ঘটনা। তদন্ত পূর্বক সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে’।