তাসলিমুল হাসান সিয়াম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
বৃষ্টিহীন আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ এলোও ভারী বৃষ্টিপাতের দেখা নেই উত্তরের জেলা গাইবান্ধায়। ফলে বর্ষা মৌসুমে পুড়ছে এ অঞ্চলের কৃষকের স্বপ্ন। বর্ষা মৌসুমে আমন আবাদের প্রয়োজনীয় কাঙ্খিত বৃষ্টি না থাকায় চরম হতাশায় রয়েছেন চাষিরা। তাপমাত্রার পারদ এখন উর্ধ্বমুখী। তাই বৃষ্টি না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন আমন চাষের পাশাপাশি পাট চাষিরাও। পানির অভাবে বিস্তীর্ণ মাঠ এখন পরিণত হয়েছে গোচারণ ভূমিতে বর্ষার আষাঢ় মাস জুড়েই মানুষ বৃষ্টির অপেক্ষায় প্রহর গুনেছে। কিন্তু প্রত্যাশার সেই বৃষ্টি দেখা মেলেনি শ্রাবনেও।
সাধারণত মধ্য আষাঢ় থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত আমন ধানের চারা জমিতে রোপণ করা হয়। কিন্তু এবার তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় তাঁরা আমন চাষাবাদ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। মূলত বর্ষাকালে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে কৃষকেরা রোপা আমন চাষ করে থাকেন। সাধারণত বীজতলায় তৈরি হওয়া চারা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগানো হয়।
শ্যালোমেশিন চালিত ও বিদ্যুতচালিত সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি দিয়ে বীজতলা তৈরি করে ধানের চারা তৈরি করলেও অনেক কৃষকের চারার বয়স দেড় মাস পেরিয়ে গেছে কিন্তু বৃষ্টি পাতের অভাবে ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না । ফলে কৃষকের মাঝে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা ও হতাশা।
এদিকে রোপা আমনের পাশাপাশি পাট নিয়েও তারা বড় বিপদে আছেন। ইতোমধ্যে ক্ষেতের পাট কাটার উপযুক্ত সময় চলে এসেছে। অথচ কোথাও পানি নেই। ডোবা-নালাতো দূরের কথা খাল-বিলেও একই অবস্থা। এ অবস্থায় পাট জাগ কীভাবে দেবে সেই চিন্তা কৃষকের মনে এখন বৃষ্টিহীন মেঘের মতো উঁকি দিচ্ছে।
তারা আরো বলেন, গত বোরো মৌসুমে ধান আবাদে চরম লোকসান করেছি। ধানের আবাদ ভালো হওয়া সত্ত্বেও কাঙ্খিত দাম না পেয়ে আমরা পুঁজি রক্ষা করতে পারিনি। পানির দরে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে এখন আমরা নিশ্ব। মনে করেছিলাম আমন আবাদ করে বোরোর ক্ষতি পুশিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু পানির অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কৃষক রানা মন্ডল বলেন ধানের চারার বয়স এক মাস হয়েছে কিন্তু বীজতলায় একটুও পানি নেই । পানির অভাবে চারা রোপণের জমি প্রস্তুত করতে পারছিনা বাধ্য হয়ে তাই বালতি দিয়ে পাশের একটা নীচু জমি থেকে হাত দিয়ে সেচ দিচ্ছি ।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তানজিমুল হাসান বলেন, জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে ভরা বর্ষা মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে আর এ কারনে কৃত্রিম উপায়ে সেচ দিতে হচ্ছে কৃষকদের ফলে উৎপাদন খরচ আরো বাড়বে । এ বছর জেলায় ১৪৫৯০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান ও ১৪৩১৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।