দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

পবিপ্রবি(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) গত এক যুগে ছাত্রদের অভ্যন্তরীন সমস্যায় প্রায় ২০ টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ঘটনায় এলাকাভিত্তিক ছাত্রদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই ঘটেছে। এছাড়াও রয়েছে বিচারহীনতা, চাঁদাবাজি, নিয়োগ বানিজ্য, টেন্ডারবাজির মত ঘটনা। ক্যাম্পাসের কোরামিং রাজনীতি অনেক বেশি শক্তিশালী। ক্যাম্পাসের বড় দুটি কোরাম হচ্ছে পটুয়াখালী কোরাম আর বরিশাল কোরাম। এছাড়াও কিছু ছোট ছোট কোরাম বিদ্যমান।  কোরামিংয়ের জন্য দলমত সব নির্বিশেষে সংঘর্ষে জড়াতে দেখা যায় পবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও অধিকাংশ সংঘর্ষের পর তদন্ত কমিটি হলেও দৃশ্যমান কোন বিচার হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের গত ১২ বছরের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

ক্যাম্পাস ঘুরে জানা যায়, ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবচেয়ে বেশী সক্রিয়, এছাড়া বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের(ইশা) নামমাত্র কমিটি থাকলেও কোন কার্যক্রমে দেখা যায় না তাদের। তাছাড়া অন্য মতাদর্শের কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসে সক্রিয় নেই। একসময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পবিপ্রবি শাখার  সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলেও ২০১৬ সালের শেষ কমিটির পর থেকে তাদের কোন কর্মকান্ড নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় ২০০০ সালের দিকে ছাত্রশিবির সক্রিয়  থাকলেও ২০০৮ সালের পর তাদের কোন কর্মকান্ড দেখা যায়নি। একই সময় ছাত্র সমাজের কর্মকান্ড দেখা গেলেও ২০০৮ সালের পর তাদের কর্মকাণ্ড দেখা যায় না।

এ বিষয়ে পবিপ্রবি ছাত্রদলের ২০১৬ সালের ঘোষিত কমিটির সভাপতি রাসেল মিয়া জানান, “দীর্ঘ ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচেটিয়ে আধিপত্য বিরাজমান এবং ছাত্রলীগের হামলা ও বৈরী আচরনে ভিন্ন ধারার রাজনীতি প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। তবুও ক্যাম্পাসে জাতীয়তাবাদী শক্তির চর্চা করতে নির্বাচনের আগে একটি কমিটি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল”

প্রক্টর অফিসের তথ্য মতে, গত এক যুগে ভিন্ন রাজনৈতিক  মতাদর্শদের মধ্যে  সংঘর্ষ দেখা যায় না।  ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের মধ্যে সর্বশেষ সংঘর্ষ ঘটে। এছাড়া গত এক যুগে ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যে ২০ টি বৃহৎ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-

২১ ডিসেম্বর,২০২২ এ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষনা কেন্দ্র করে  পদপ্রাপ্ত আর পদ বঞ্চিতদের সংঘর্ষ ঘটে যেখানে  আহত হন ২০ জন;
০১ জুন, ২০১৮ আঞ্চলিকতার দ্বন্দ্বের জের ধরে
শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০জন আহত হয়েছেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে-ই-বাংলা হলের ৩২টি কক্ষের দরজা, জানালা ও  আসবাব পত্র ভাঙচুর করা হয়।
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বাসের সামনের আসনে বসা নিয়ে  ছাত্রলীগের দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন;
২২ এপ্রিল, ২০১২ হরতালবিরোধী মিছিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০,
২৮ অক্টোবর, ২০১১ র্যাগিং নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, “ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এবং পরবর্তীতে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের আত্নগোপনে থাকা কর্মীরা উস্কানি দিয়ে এটাকে বড় সংঘর্ষে রুপান্তরিত করে”। এসব সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ক্যাম্পাসে প্রথম দিন আসার পরই শিক্ষার্থীরা র্যাগিংয়ের শিকার হন। কিছু দিন যাওয়ার পর শুরু হয় কোরাম সেটাপ। পরবর্তীতে রুম দেওয়া থেকে শুরু করে সব কিছুতেই কোরাম রাজনীতি জড়িত। কোরাম না করে ক্যাম্পাসে চলা প্রায় অসম্ভব ”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার (অ.দা.) অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন,” বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত প্রাঙ্গন, এখানে বিভিন্ন দলমতের ছাত্র রয়েছে। অধিকাংশ সময়ে এই ভিন্ন মতের  জন্যই ছাত্রদের সংঘর্ষে জরাতে দেখা যায়৷ তাছাড়াও এলাকাভিত্তিক গ্রুপিং অনেকাংশেই দায়ী এই সংঘর্ষের জন্য”

সংঘর্ষের বিচার বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, “ছাত্রদের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছাত্র রাজনীতির প্রভাব দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ক্ষমতা থাকলেও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টার কারনেই বিচার বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না অনেক সময়।”

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version