এ,এম স্বপন জাহান
মধ্যনগর উপজেলা প্রতিনিধি:
বিদ্যালয়ে টয়লেট না থাকায় মহাবিপাকে পড়েছে শিক্ষকসহ ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রায় ২ বছর ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।। এমনই ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দঃ ইউনিয়নে অবস্থিত গড়াকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতল বিশিষ্ট বিদ্যালয় টি তে নেই কোন টয়লেট। ৪ জন শিক্ষক ও ২৭৭ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের টয়লেটের প্রয়োজন হলে সবাই আশে-পাশে বাসাবাড়িতে যাচ্ছে। এতে করে আশে-পাশের বাড়ির লোকজনেরাও বিরক্তবোধ করছেন। এমনকি শিক্ষার্থীরা টয়লেটের অভাবে যেখানে সেখানে পয়:নিষ্কাশনের কারনে পরিবেশ দূষণ সহ চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও পড়তে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের।
বিদ্যালয়ের ৫ ম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্র সজীব, ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রী আখী, সহকারী শিক্ষক মোছাম্মত পারভিন আক্তারের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে টয়লেট না থাকায় । নিদারুণ কষ্ট সহ্য করছেন তারা।বিশেষ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের পড়তে হচ্ছে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে বিদ্যালয়টি নতুনভাবে সংস্করণের কাজ শুরু হওয়ায় পুরাতন টয়লেট ভেংগে ফেলা হয়েছে।বিদ্যালয় নির্মাণের সাথে সাথে টয়লেট নির্মাণের কথা থাকলেও কোন এক অদৃশ কারনে হয় নি বিদ্যালয়ের একমাত্র টয়লেট টি।গত এক বছর আগে বিদ্যালয়টি উদ্ভোদনের মাধ্যমে পাঠদান শুরু হলেও নির্মাণ হয় নি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য টয়লেট এমন কি সাময়িক ব্যবহারের জন্য কোন টয়লেট তৈরি করা হয়নি।
অত্র বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবক বলেন,সরকারী একটি বিদ্যালয়ের ব্যবহারের জন্য নেই টয়লেট বিষয় টি খুবই লজ্জাজনক। পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবার কথা চিন্তা করেও দ্রুত টয়লেট নির্মাণের জোর দাবী জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: চাঁন মিয়া জানান, টয়লেট ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান কি চলতে পারে? তবুও চলছে গত বছর ধরে। বহুবার বলেও হচ্ছে না সমাধান।আমি নিজ উদ্যোগে কয়েকবার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি বিভিন্ন দফতরে গিয়েছি।কিন্তু হয়নি কোন সমাধান পরবর্তী অর্থবছরের বাজেটে হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।তবে সাময়িক সময়ের জন্য ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে একটি অস্থায়ী টয়লেট দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।জায়গা সংকটের কারনে তাও করতে পারছি না।
গড়াকাটা দারুসুন্নাহ নূরানী হাফিজিয়া এতিমখানা মাদ্রাসার সভাপতি, হাজী ফজলুল হক বলেন,বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা একসাথে হওয়ায় আরও বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।ওয়াশ ব্লক না থাকলে স্কুলের পরিবেশ যেমন পাঠোপযোগী থাকে না, তেমনি আশেপাশের এলাকায় বসবাসকারীগণও দূষণের শিকার হন।
ধর্মপাশা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মেহেদি হাসান জানান,ছাত্রছাত্রীদের দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করেছি।ওয়াশ ব্লক নির্মাণের জন্য রাজশাহীর এক ঠীকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে। এখন যেহেতু বর্ষাকাল তাই বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার সাথে সাথে কাজ শুরু করা হবে।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন,বিষয় টি নিয়ে আমি জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে কথা বলবো।ওয়াশ ব্লক যাতে অতিদ্রুত নির্মাণ হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবো।