মোঃনাজমুল হোসেন বিজয়।
বরগুনা জেলাপ্রতিনিধিঃ
আষাঢ়ের বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে বরগুনা জেলার আমতলীর নদী ও খাল গুলোতে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নৌকার কারিগরা। গ্রামের পাশে গেলেই শোনা যাবে ঠুকঠাক শব্দ। শব্দ যেন মাধুরী মিশিয়ে যায়। চলছে নৌকা তৈরির ধুম। বর্ষাকাল এলেই এলাকার মানুষের প্রয়োজন হয় নৌকার। নৌকা তৈরিকে ঘিরে জীবিকার তাগিদে গড়ে উঠেছে উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের চুনাখালী গ্রামের মানুষের নৌকা তৈরি পেশা।
চুনাখালী বাজারের ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন,‘আমি দীর্ঘ ৪ বছর যাবত নৌকা তৈরি ব্যবসায় জড়িত । আমি আগে গার্মেন্টসে চাকরি করতাম পরে নৌকা তৈরি করে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করি। এছাড়া আমি বিভিন্ন হাটে বিক্রির উদ্দেশ্যে কলাপাড়া মহিপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় যাই। আর বছরে সারা বছরই নৌকা বানাই। কিন্তু বর্ষা মৌসুমের সময় আমার কারিগররা দম ফেলার সময় পায় না। প্রতি মাসে প্রায় ৪০টি নৌকা বানানো হয় খুচরা দুই-একটা বিক্রি ছাড়া সব নৌকা বিক্রি হয়ে যায়।
দেড়শ’ বছর ধরে বংশপরম্পরায় এ পেশাটি ধরে রেখেছে এ গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার। এ গ্রামটি এখন সবার কাছে নৌকা তৈরির গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে একাধিক মানুষের।
চুনাখালী গ্রামের মিথুন কর্মকার জানান, দূর-দূরান্তের মানুষ এ গ্রামকে ‘নৌকা গ্রাম’ হিসেবে চেনে। প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় পলিথিন টানিয়ে আবার কেউ খড়ের ছাপড়া দিয়ে নৌকা তৈরির জন্য অস্থায়ী ঘর বানিয়েছেন। দু’জন কাঠমিস্ত্রি মিলে গড়ে প্রতিদিন একটি নৌকা তৈরি করতে পারেন। প্রতিদিন কারিগররা পান তিন থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকা। এখানকার তৈরি নৌকাকে এ এলাকায় ডিঙ্গি নৌকা বলে। সহজেই ও অল্প পানিতে এ নৌকা চলাচল করতে পারে। তাই এ নৌকার চাহিদা এলাকায় বেশি।
কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম তালুকদার জানান, পূর্ব চুনাখালী গ্রামটি নৌকা তৈরির জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। তাদের এ পেশাটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া প্রয়োজন।