আফগানিস্তানের বোলারদের সামনে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও অসহায় আত্মসমর্পন করেছে বাংলাদেশ। লজ্জার হারে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হেরেছে টাইগাররা।

শনিবার (৮ জুলাই) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১৪২ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে রানের হিসেবে এটি সর্বোচ্চ ব্যবধানে হার টাইগারদের। এর আগে বড় হারটি ছিল ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে ১৩৬ রানে।

চট্টগ্রামে এদিন আফগানদের দেয়া ৩৩২ রান তাড়া করতে নেমে ৪৩.২ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের ইনিংস থামে ১৮৯ রানে। বোলিংয়ে সময় চোটে পড়ায় মাঠে নামা হয়নি শেষ ব্যাটার এবাদত হোসেনের। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বৃষ্টি আইনে ১৭ রানের ব্যবধানে হেরেছিল লিটনরা।

বিশাল রান তাড়ায় নেমে লড়াই শুরুর আগেই হারের আভাস দিয়ে দেয় টাইগাররা। ৭২ রান তুলতেই প্রথম ৬ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আউট হন অন্তর্বর্তকালীন টাইগার অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। ব্যক্তিগত ১৩ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ফজলহক ফারুকীর শর্ট লেন্থের বলটি ঠিকঠাক খেলতে পারেননি লিটন। মাথার ওপর বল ভাসিয়ে দেন তিনি, ৩০ গজের ভেতরেই ক্যাচ ধরেন মোহাম্মদ নবি। বাংলাদেশের দলীয় রান তখন ১৫। লিটন ১৩ রানের মধ্যে চারই মেরেছিলেন ৩টি।

মাত্র ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেই চাপ ধীরে ধীরে সামাল দিতে থাকেন সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয় মিলে। সাকিব ওয়ানডে মেজাজে খেললেও ধীরগতিতে খেলে তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন হৃদয়। কিন্তু দলীয় ৬৫ রানের সময় রশিদ খানের গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হন তিনি। ৩৪ বলে হৃদয় করেন ১৬ রান। হৃদয় আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পর তার পথ ধরেন সাকিব। নবির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে উইকেট হারান তিনি। ২৯ বলে ২৫ রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকে। আফিফ ক্রিজে এসে এক বলের বেশি খেলতেই পারেননি। রশিদ খানের কাছে ধরাশায়ী হন তিনি। আফিফ ক্যাচ দেন স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা নবিকে।

এরপর সপ্তম উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনের ৮৭ রানের জুটিতে কিছুটা চাপমুক্ত হয় বাংলাদেশ। কিন্তু বেশিদূর দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি মিরাজ। ৪৮ বলে ২৫ রান করে মুজিবকে ওয়াইড লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে রহমত শাহর হাতে ধরা পড়েন তিনি। অন্যদিকে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৫০তম ম্যাচ খেলতে নেমে ৪৫তম ফিফটি তুলে নেন মুফফিক। তার লড়াকু ইনিংসটি কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। মুশফিক থামেন ব্যক্তিগত ৬৯ রানের ইনিংস খেলে। ৮৫ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৬টি চার। তার আউটের সঙ্গে থামে বাংলাদেশের ইনিংসও।

এদিন প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩১ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। ওপেনিং জুটিতেই আফগানদের শক্ত ভিত গড়ে দেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। তাদের জুটিতে আসে ২৫৬ রান। আফগানদের ওয়ানডে ইতিহাসে যেকোনো উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রানের জুটি। ১২৫ বলে ১৩ চার ও ৮ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ১৪৫ রান করে আউট হন গুরবাজ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version