নাজমুল হাসান,মাদারীপুরঃ
মাদারীপুরে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ বাণিজ্যের প্রমাণ পাওয়ায় সাবেক পুলিশ সুপারসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার দুপুরে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।
মামলায় আসামিরা হলেন- মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, সাবেক কনস্টেবল নুরুজ্জামান সুমন, জাহিদুল ইসলাম, বরিশালের মুলাদীর বালিয়াতলী গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান সরদারের ছেলে টিএসআই গোলাম রহমান, মাদারীপুর পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল সহকারী পিয়াস বালা ও মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের মৃত সফিউদ্দিন ফরাজীর ছেলে হায়দার ফরাজী।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৮ মে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হেড কোয়ার্টার্স। পরে অসংখ্য নারী-পুরুষ আবেদন করলে ২৬ জুন ৩১ জন পুরুষ ও ২৩ জন নারীকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এর আগেই গত ২০১৯ সালের ২৪ জুন থেকে ২৬ জুন কয়েক ধাপে ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা উপরোক্ত আসামিদের কাছ থেকে গচ্ছিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের একটি বিশেষ দল।
পরে অনুসন্ধানে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স জানতে পারে উদ্ধারকৃত টাকা বিভিন্ন চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি একাধিক বার তদন্তে উঠে আসে ঘটনার সত্যতা। তাৎক্ষণিক ওই আসামিদের সাময়িক বরখাস্ত ও বিভিন্ন স্থানে সংযুক্তি করে রাখা হয়। এরপর তাদের বিরুদ্ধে দুদককে মামলা নিতে সুপারিশ করে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করে দুদক।
জানা যায়, সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার বর্তমানে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন। অপরদিকে কনস্টেবল নুরুজ্জামান সুমন ও জাহিদুল ইসলাম বরখাস্ত হন।
এদিকে পিয়াস বালা চাকরিচ্যুত, অপরদিকে হায়দার ফরাজী পলাতক রয়েছেন। আর গোলাম রহমানের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিকুর রহমান জানান, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অসৎ উপায়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করায় দণ্ডবিধির ১৬১/৪২০/১০৯ ধারায় মামলা করা হয়েছে। শিগগিরই আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ কমিটির তিন সদস্যের মধ্যে সভাপতি ও প্রধান ছিলেন মাদারীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার। এছাড়া বাকি সদস্যরা হলেন, মাদারীপুরের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল ইসলাম ও গোপালগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।