সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের নিয়ে যাওয়া এবং সাংস্কৃতিক চর্চায় প্রযুক্তিকে সম্পৃক্ত করে আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন জাতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সকালে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও একটি সমাপ্ত প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। মূল অনুষ্ঠানটি জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের নিয়ে যেতে হবে। তৃণমূলের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। অনেক মেধা সেখানে লুকিয়ে আছে। সেগুলো আমাদের উৎসাহিত করতে হবে, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং আমাদের জাতীয় পর্যায়ে সেগুলো মূল্যায়ন করতে হবে। আমাদের দেশের মানুষ উদার মানসিকতার, অসাম্প্রদায়িক চেতনার। সেই দিকটি যাতে আরও বিকশিত হয়, সে ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের বিশ্ব প্রযুক্তির বিশ্ব। প্রযুক্তি শিক্ষা এবং প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা, আমাদের সাংস্কৃতিক চর্চায় প্রযুক্তিকে সম্পৃক্ত করে, আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন জাতি হিসেবে আমাদের প্রজন্মকে গড়ে তুলতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যেকোনো দেশের বা যেকোনো জাতির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করতে গেলে সংস্কৃতির উপরেই আঘাতটা আসে। সেই আঘাতটা এনেছিল পাকিস্তানী শাসকরা। সে ১৯৪৮ সালে আঘাতটা আসে। বাংলা ভাষায় কথা বলা যাবে না, উর্দু ভাষা বলতে হবে। নানাভাবে আমাদের মাতৃভাষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের সংস্কৃতিটাই ধ্বংস করতে চেয়েছিল। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধরে রাখা, তা বিকশিত করা এবং তারই মাধ্যমে আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে।

সরকারপ্রধান বলেন, বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাংলা ভাষার, সাহিত্য, সঙ্গীত, নাটক, চলচ্চিত্র, চারুকলা, সৃজনশীল প্রকাশনাসহ শিল্পের সব শাখার উৎকর্ষ সাধন, চর্চার ক্ষেত্রে আরও প্রসারিত করার উদ্যোগ নিয়েছি। এই লক্ষ্যে জেলার শিল্পকলা একাডেমি ভবন এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ বা তাদের জন্য অনেক জায়গায় একাডেমিও নির্মাণ করে দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন দেশ শাসনের দায়িত্ব নেন, তখন আমাদের কোনো রিজার্ভ মানি ছিল না, কারেন্সি নোট ছিল না। এমন একটি অবস্থায় তিনি দেশের শাসনভার হাতে নিয়েছিলেন। তার উপর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ কিন্তু তখনও সংস্কৃতি বিকাশের কথা তিনি ভুলেন নাই।

তিনি বলেন, জাতীয় গ্রন্থাগারগুলো ডিজিটাল করার উদ্যোগ নিয়েছি। পর্যায়ক্রমে সব উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের সরকারি লাইব্রেরি কার্যক্রম করার উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করবো। জেলা পর্যায়ে একটি করে লাইব্রেরিগুলো রয়েছে, সেগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। লাইব্রেরিকে আমাদের আরও বৈচিত্র্যময় এবং পাঠকবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে। পাবলিক লাইব্রেরিতে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলার জন্য ৫২৪ কোটি টাকা ব্যয় গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version