হযরত আলী,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় মাদক সেবনকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় ফরহাদ হোসেন(২৪) নামের এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সেলিম সম্রাট, সুলতান আহমেদ রাজন ও মাসুদ মিয়ার বিরুদ্ধে। আহত ওই সাংবাদিক বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগী সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে ওই তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এর আগে শনিবার রাতে উপজেলার বড়খাতা বাজারের ডাচবাংলা ব্যাংক এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার বড়খাতা এলাকার বুলু মিয়ার ছেলে সেলিম সম্রাট (৩০), এছাড়া সে নাগরিক ভাবনা নামের একটি পত্রিকায় কাজ করে বলে জানা গেছে, অপরজন হলেন উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ রাজন(৩৮) ও একই এলাকার আনিছার রহমানের ছেলে মাসুদ মিয়া(৩২)। ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন রংপুর টাইমস নামের একটি স্থানীয় অনলাইন পত্রিকায় কাজ করেন। জানা গেছে, শনিবার দুপুরে উপজেলার পশ্চিম সাড়ডুবি এলাকার দুই নম্বর পুলের উপর একটি ইজিবাইক থেকে বেশ কয়েকটি ফেনসিডিলের বোতল মাটিতে পড়ে যায়। পড়ে যাওয়া ফেনসিডিলের বোতল গুলো স্থানীয়রা তুলে নেয়। এ সময় পাশেই থাকা সাংবাদিক সেলিম সম্রাট সেখানে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে বোতল গুলো পুলিশকে দেয়ার কথা বলে নিয়ে সে নিজেই খেয়ে ফেলে। পরে সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন এ বিষয়টি জানতে পেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এটিকে কেন্দ্র করে ওই দিন রাত ১০টার দিকে সেলিম সম্রাট , সুলতান আহমেদ রাজন ও মাসুদ মিয়াসহ আরও কয়েকজন বড়খাতা বাজারে ফরহাদ হোসেনকে আটক করে মারধর করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফরহাদ হোসেনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ বিষয়ে আহত সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন বলেন, সেলিম সম্রাট ফেনসিডিল নিয়ে খেয়েছে তা নিয়ে লেখালিখি করায় আমাকে আটক করে মারধর করেছে। সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মাদকের সাথে কাজ করে আসছে। সে নিজেও একজন মাদক সেবি। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আর তার শাস্তি দাবি করছি। এদিকে ঘটনাস্থলে সেলিম সম্রাটের ফেনসিডিল সেবনের প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, একটি ইজিবাইক থেকে বেশ কয়েকটি ফেনসিডিল পড়ে যায়। এ সময় স্থানীরা তা তুলে নেয়। হঠাতই সেলিম সম্রাট নামের ওই সাংবাদিক পরিচয়দানকারী যুবক এসে স্থানীয়দের হাত থেকে বোতল গুলো নিয়ে নিজেই খেয়ে ফেলে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেলিম সম্রাট বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকায় যাই। কিন্ত আমি কোন ফেনসিডিল সেবন করিনি। ফরহাদ আমাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা ফেসবুকে লিখছে। আমি শুধু তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকি তাকে কোন মারধর করিনি। এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ রাজন বলেন, আমি ফরহাদকে কোন মারধর করিনি। এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিক রবিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখ জনক। যেহেতু সাংবাদিকে সাংবাদিকে ঝামেলা হয়েছে সেটি বসে আলোচনা সমাধান করা যেত। কিন্ত সম্রাট তার লোকজন নিয়ে ফরহাদের উপর হামলা করেছে তা মোটেও বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনি যা যা মিস করেছেন
Add A Comment