সেনেগালের বিপক্ষে লজ্জার হারের স্বাদ পেয়েছে ব্রাজিল। মার্কুইনোসের আত্মঘাতী গোল, এদেরসনের পেনাল্টি উপহার দেওয়া। মিডফিল্ডে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারা এবং গোল মুখে রিচার্লিসনের বাজে পারফরম্যান্সে ৪-২ গোলে হেরেছে সেলেসাওরা।
কাতার বিশ্বকাপের পর ব্রাজিলের নতুন শুরুর পরিকল্পনায় বড় এক ধাক্কা এই হার। সঙ্গে ব্রাজিলের অন্তবর্তীকালীন কোচ মানো মেনেসেজ কৌশলেও ব্যর্থ। এই ম্যাচ দিয়ে যেন প্রমাণ হয়ে গেছে, স্থানীয় কোচরা ব্রাজিলের জাতীয় দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর্যায়ে নেই।
এদেরসন (৪/১০): হাবিব দায়লোর ভলি এবং সাদিও মানের শটে কিছু করতে পারেননি। মার্কুইনোস আত্মঘাতী গোল খাইয়ে দিয়েছেন। যোগ করা সময়ে আবার ফাউল করে পেনাল্টি খেয়েছেন এদেরসন। ট্রেবল জয়ী ম্যানসিটি গোলরক্ষকের থেকে আরও ভালোর প্রত্যাশা করেছিল ব্রাজিল।
দানিলো (৫/১০): দূর থেকে দুর্দান্ত একটা শট নিয়েছিলেন। রক্ষণে মোটামুটি ভালো ছিলেন তিনি। তবে আক্রমণে সহায়তা করতে পারেননি। সাদিও মানেকে ফাঁকায় ছেড়ে দেওয়া তার ভুল।
এদের মিলিতাও (৫/১০): ভুল হয়তো এদের মিলিতাও করেননি। কিন্তু রক্ষণটা মার্কুইনোসের সঙ্গে এক সুঁতোয় গাঁথতে পারেননি। তারা দু’জনই আউট অব পজিশন হয়েছেন একাধিকবার। সেনেগালের ফরোয়ার্ডের ওপরে দাঁড়িয়ে খেলেছেন।
মার্কুইনোস (৪/১০): ব্রাজিলের হয়ে একটি গোল করেছেন মার্কুইনোস। তবু তার রেটিং মাত্র চার। কারণ আত্মঘাতী গোল দিয়েছেন একটি। রক্ষণে জায়গা ছেড়ে খেলায় বিপাকে পড়েছে ব্রাজিল।
আরটন (৫/১০): লেফট ব্যাকে নতুন খেলোয়াড় তোলার চেষ্টা করছে ব্রাজিল। আরটন ওই চিন্তায় দলে আছে। কিন্তু তিনি ভালো ক্রস দিতে পারেননি, ক্রস আটকাতে পারেননি। উইঙ্গারকে বলও সরবরাহ করতে পারেনন।
জোয়েলিনটন (৫/১০): সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে দায়িত্ব সামলাতে পারেননি জোয়েলিনটন। ম্যালকমের বাড়ানো বল থেকে গোল করা উচিত ছিল। পারেননি তিনি। তার বাজে পারফরম্যান্সের কারণেই মিডফিল্ডে নিয়ন্ত্রণ হারায় ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধে তাকে বদলি করে তুলে নেওয়া হয়। রাফায়েল ভিয়েগা এসে মিডফিল্ডে নিয়ন্ত্রণ আনতে সহায়তা করেন।
ব্রুনো গিমারেজ (৬/১০): পরিশ্রম করে খেলেছেন। বল পায়ে গোছালো ছিলেন। সেনেগালিচদের প্রেস সামলেছেন। কিন্তু মিডফিল্ডে জোয়েলিনটনের সমর্থন পাননি। ভালো সুযোগ তৈরি করে দেওয়া, থ্রু দেওয়া এগুলো পারেননি।
লুকাস পাকেতা (৬/১০): ম্যাচের ১১ মিনিটেই ভিনিসিয়াসের ক্রসে হেড দিয়ে গোল করেন। সেজন্য তার রেটিং ভালো। কিন্তু মিডফিল্ডের দায়িত্ব ঠিকঠাক সামলাতে পারেননি। ইনজুরি নিয়ে বদলি হন তিনি।
ম্যালকম (৪/১০): ভালো একটা পাস দিয়েছিলেন। যা থেকে গোলও পেতে পারতো ব্রাজিল। এর বাইরে ম্যাচে প্রভাব রাখতে পারেননি ম্যালকম। ড্রিবলিং, গতি কিংবা পাস দিয়ে দলকে সেভাবে সহায়তা করতে পারেননি।
রিচার্লিসন (৩/১০): বাজে লিগ মৌসুম কাটানোর পর রিচার্লিসন কেন দলে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। গিনির বিপক্ষে তিনি বাজে খেলেছেন। সেনেগালের বিপক্ষে তিনি যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, তাতে ব্রাজিল দলে তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়।
ভিনিসিয়াস জুনিয়র (৭/১০): ব্রাজিলের জার্সিতে যেভাবে ভিনি খেলছেন সেভাবে গোলটা তিনি পাচ্ছেন না। রিয়ালের মতো ব্রাজিল তার জন্য স্পেস তৈরি করতে পারে না। যেটা ভিনির সেরা শক্তির জায়গা। তারপরও গতি, ড্রিবলিং, পাস, গোলে সহায়তা মিলিয়ে ভিনিসিয়াস ছিলেন ব্রাজিলের সেরা পারফর্মার।
এর বাইরে বদলি নেমে রাফায়েল ভেইগা, অ্যালেক্স টেলেস কিছুটা ভালো খেলেছেন। তবে রিচার্লির বদলি প্রেদি ভরসা দিতে পারেননি। ম্যালকমের বদলি রনিও সাম্বা ছন্দের আশা দিতে পারেননি। ব্রাজিলের কোচ মেনেসেজ দশে ৪ রেটিং পেয়েছেন। তিনি দল নিয়ে অনেক পরিশ্রম করছেন বলেই খবর। কিন্তু ব্রাজিলের দায়িত্ব সামলানোর জন্য তিনি প্রস্তুত নন।