দেশের কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির জন্য বিদেশি নতুন বাজার খুঁজতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে ‘কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২৩’ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে কৃষিজাত পণ্য উৎপন্ন হয়, তার জন্য বহির্বিশ্বের বাজার খুঁজতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) দেশগুলো- যেখানে আমাদের দেশের মানুষ আছেন, তাদের মধ্যেও দেশি পণ্য কেনার আগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে ফল-শাকসবজি কিনতে তারা আগ্রহী। সেজন্য ওইসব দেশে বেশি নজর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা প্রসঙ্গে বলেন, এর আওতায় কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প উৎপাদনে সরকারের তরফ থেকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ খাতে যেসব প্রণোদনা ও সহযোগিতা করা হবে, তার একটি প্রস্তাবনা বা নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষি ও খাদ্য-পণ্যে আমরা বিশেষ সফলতা অর্জন করেছি। এসব পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে যারা উৎপাদনকারী তাদের সুলভ মূল্য দেওয়া যাবে। বাজারজাতকরণের সুবিধা ছাড়াও রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করতেও অনেকগুলো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এই নীতিমালায়।
বালু পরিবহণে রাস্তার ক্ষতি হলে ইজারাদারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে : মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, সীমান্তবর্তী নদী দিয়ে যে বালু আসে, সেটা মোটা। তবে আসতে আসতে তা চিকন হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে এসব উৎসে যদি ব্লক নির্মাণ করা যায়, তখন এ বালু বেশি কাজে লাগানো যাবে। যা অর্থনৈতিকভাবেই সাশ্রয়ী হবে। এছাড়া ওইসব এলাকায় এ জাতীয় শিল্প তৈরি করতে অনুদান ও সহযোগিতা করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, এতে বালুটা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারব। পাশাপাশি আমাদের ওপর চাপ কমে যাব।
বৈঠকে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বালু পরিবহণের কারণে রাস্তার বা স্থাপনার ক্ষতি হলে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রেখে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ এর এই খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
অন্যের জমি নিজের দাবি করলে ৭ বছরের জেল : অন্যের জমি কেউ নিজের বলে দাবি করছে-এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে সাত বছরের কারাদণ্ড হবে। এছাড়া অন্য কারও জমি ষড়যন্ত্র করে নিজের নামে নেওয়া হয়েছে-এমন প্রমাণ মিললে দুই বছরের কারাদণ্ড হবে। ‘ভূমি অপরাধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩’ এ রাখা হয়েছে এসব বিধান। মন্ত্রিসভা এ আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শিক্ষা আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন: ‘হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শিক্ষা আইন-২০২৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, খসড়া অনুযায়ী হোমিওপ্যাথি সংক্রান্ত আলাদা কাউন্সিল হবে। এই কাউন্সিল সার্বিক সিদ্ধান্ত নেবে। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় নিবন্ধকের কার্যালয় থাকবে। তবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরা নামের আগে ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেবে কাউন্সিল ।
এছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘লক্ষ্মীপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।