স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার একটি মাজার নিয়ে বিদ্যমান দুটি পক্ষ হয়েছে। এক পক্ষের অভিযোগ, মাজার পরিচালনায় বর্তমান কমিটিসহ আদালতে মামলা চলমান থাকা স্বত্ত্বেও নতুন একটি কমিটি গঠন করে মাজারের দানবক্সের তালা ভেঙে টাকা নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গত রোববার জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
আর অপর পক্ষটির অভিযোগ, নিয়মবর্হিভুতভাবে মাজার পরিচালনা করায় তারা নতুন কমিটি গঠন করে প্রশাসনের সহযোগিতায় মাজারের দানবক্সের তালা ভেঙে টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছে। এ নিয়ে সোমবার (১২ জুন) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মাজার সূত্রে জানা গেছে, কেন্দুয়ার স্বল্পনন্দীগাঁওয়ে সাধক মরহুম আব্দুস সাত্তার খানের নামে একটি মাজার রয়েছে। গত ২০২১ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি ওয়াকফনামা রেজিস্ট্রি দলিলমূলে সাড়ে ১৫ শতক জায়গায় মাজারের জন্য দান করা হয়। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর তিন বছর মেয়াদী ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির কমিটির সভাপতি করা হয় আব্দুস সাত্তার খানের ভক্ত ও চাচাতো ভাই মো. শফিকুল ইসলাম খানকে। আর সাধারণ সম্পাদক করা হয় মো. আব্দুল হেলিম ভূঁঞাকে। কমিটি মাজার পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ গত ১৬ জানুয়ারি ৭১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন একটি কমিটি গঠন করে। এতে সভাপতির করা হয় আশুজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলীকে। আর আব্দুস সাত্তার খানের মেয়ে রুমি আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরে নতুন কমিটির বিরুদ্ধে চলতি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হেলিম ভূঁঞা গত ২৭ মার্চ কেন্দুয়া সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। কিন্তু গত শনিবার পূর্বে দুপুরের দিকে নতুন কমিটির লোকজন কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মাজারের দানবাক্সের তালা ভেঙে টাকা পয়সা নিয়ে যায়। এ নিয়ে পরদিন রোববার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম খান।
শফিকুল ইসলাম বলেন, মাজার পরিচালনা কমিটির থাকা ও আদালতে মামলা চলমান থাকা স্বত্ত্বেও নতুন প্রতিপক্ষ একটি কমিটি তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোতাহার হোসেনকে দিয়ে গত শনিবার দুপুরে দানবাক্সের তালা ভেঙে টাকা পয়সা নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোতাহার হোসেন বলেন, মরহুম আব্দুল সাত্তার খানের মেয়ে রুমি আক্তারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে পুলিশ সাথে নিয়ে মাজারের দানবাক্সের তালা ভাঙা হয়। এখানে আমরা নিয়মানুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছি।
কেন্দুয়ার ইউএনও কাবেরী জালাল বলেন, ‘মাজার নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। নতুন কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে মাজারের দানবক্স খুলে প্রায় ৪৯ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে।
এ দিকে, সোমবার দুপুরে নয়া কমিটির আয়োজনে মাজারের সামনের একটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মরহুম আব্দুস সাত্তার খানের জামাতা ও মাজারের মোতাওয়াল্লি মাসুদুর রহমান। এসময় তাঁর স্ত্রী সাধারণ সম্পাদক রুমি আক্তারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের দাবি, কমিটি গঠন করে ওয়াকফ এস্টেটের নিয়ম অনুযায়ী মাজার পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু আগের কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ, আদালতে মামলাসহ নানাভাবে ভক্তবৃন্দদের নাজেহাল করছেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, মাজারের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।