দুমকী পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এর সহযোগিতা এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় হাসি ফিরেছে শামসুলের মুখে।
চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট থানার নীল কমল গ্রামের একজন হত দরিদ্র বাসিন্দা শামসুল । তার পাঁচ সদস্যের বিশাল সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী তিনি । পরিবারের দৈনিক খাদ্যের চাহিদা মেটাতেই এক সময় হিমশিম খেতে হতো। ২০২০ সালে জমানো ৩০ হাজার টাকায় বাড়ির পাশে ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে মুগডাল চাষের মাধ্যমেই শুরু হয় শামসুলের সফলতার গল্প। বর্তমানে তিনি ১৩২ শতাংশ জমিতে মুগডাল ও অন্যান্য সবজি চাষ করছেন। মুগডাল চাষ করেই সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। এলাকায় সৃষ্টি করেছেন সফলতার উদাহরণ।
প্রথম কয়েক বছরে জমিতে ডাল চাষ করলেও লাভের মুখ দেখেনি তিনি। এমন সময় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় এবং পরিবার উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কৃষি খাতের অওতায় আসেন তিনি। সমন্বিত কৃষি ইউনিটের বিভিন্ন অনুষ্ঠান (উঠান বৈঠক, প্রশিক্ষন, মাঠ দিবস) এর মাধ্যমে সঠিক পদ্মতিতে ডাল চাষ এবং বিভিন্ন ধরনের উচ্চ ফলনশীল জাতের ডাল সম্পর্কে জেনে বারি মুগ-৬ ডাল চাষ করেন। তিনি সমন্বিত কৃষি ইউনিটের সহযোগিতায় ৪০ শতাংশ জমিতে ডাল ও সবজি চাষ করেই লাভবান হন।দেশীয় পদ্ধতিতে চাষ হওয়ায় বাজারে তার সবজির যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বিক্রিতেও ভালো দাম পাচ্ছেন।
শামসুল বলেন,” ধান চাষ তেমন একটা লাভজনক না হওয়ায় দেশি পদ্ধতিতেই ডাল ও মৌসুমি সবজি চাষ করেন। মানবদেহের ক্ষতিকারক রাসায়নিক সার এবং ওষুধ ব্যবহার না করে জৈবসার দিয়েই চাষাবাদ করে থাকেন। সংসারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতি বছর ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লাভ করেন। তিনি আরো বলেন, মুগ ডাল চাষের এ সফলতা দেখতে আশে পাশের লোকজন তার বাড়িতে আসেন এবং তিনি সকলকে আগামীতে মুগ ডাল চাষে উদ্বুদ্ধ করেন। আগামীতে আরও বড় পরিসরে বারি মুগ -৬ ডাল চাষ করবেন। এ বছর আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুন লাভবান হয়েছেন।”
পরিবার উন্নয়ন সংস্থা সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন,” মুগ ডাল চাষ করার জন্য প্রথমেই সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তারপর প্রশিক্ষণের পর তাদের জমি প্রস্তুত করানো হয়। পরে বীজ লাগানো হয়। লাইন করে মুগ ডাল চাষ করলে এতে ফলন বেশী পাওয়া যায়। এসময় কিছুদিন পরপর আগাছা পরিষ্কার করা হয় তাতে করে মুগের গাছ গুলো পর্যাপ্ত পুষ্টি পেয়ে বেড়ে ওঠে ও ফলন ভাল হয়।”
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওমর ফারুক জানান, “আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের কৃষি পরামর্শ দিয়েছি। আগামীতে এ রকম মুগ ডাল চাষ করলে কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।”