গাজীপুরের পর এবার বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনে নির্বাচনি পরীক্ষায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে জনপ্রিয়তা প্রমাণের লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে দক্ষিণের এই দুই নগরে। সবকেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হবে এবং থাকবে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। নির্বাচন কমিশনও কেন্দ্রীয়ভাবে তা পর্যবেক্ষণ করবে।
এবার বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচনের প্রচারে কোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মেলেনি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যেও ছিল না তেমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
বরিশালে মেয়র পদে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকলেও ক্ষমতাসীনদের ‘দ্বন্দ্বের’ মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীও আলোচনায় রয়েছেন।
সরকারের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত।
অন্যদিকে মেয়র নির্বাচিত হলে নিজে চুরি করবেন না, কাউকে চুরি করতেও দেবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস।
জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের অভাবে কাঙ্ক্ষিত শিল্প-কারখানা গড়ে না ওঠায় ভোলা থেকে গ্যাস সংযোগের দাবি পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
খুলনায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক নগরীকে আধুনিক, পরিবেশবান্ধব ও স্মার্ট হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এই সিটিতে বিএনপির কেউ মেয়র পদে প্রার্থী না হলেও দলটির অন্তত আট নেতাকর্মী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে আছেন জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ নেতাকর্মীও।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা ইতোমধ্যে বলেছেন, বিএনপি ভোটে না থাকলেও তাদের প্রার্থীদের অনেকে স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন। অবশ্য বিএনপি বলেছে, এ ধরনের কোনো কৌশলে নেই তারা।
সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে সাতজন ও খুলনায় পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দুই সিটিতে আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টির প্রার্থী রয়েছেন। বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তবে দুই সিটিতে তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী কাউন্সিলর পদে ভোট করছেন।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটারের খুলনা সিটি করপোরেশনে ৩১টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যদিও এ সিটিতে দুজন সাধারণ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জয়ী হয়েছেন।
খুলনায় সিটিতে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্র ও ১৭৩২টি ভোটকক্ষ রয়েছে। অপর দিকে দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন ভোটার অধ্যুষিত বরিশাল সিটি করপোরেশনে ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১১৮ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪২ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন।
এ সিটিতে একজন সাধারণ কাউন্সিলর বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন। এখানে ১২৬টি ভোটকেন্দ্র ও ৮৯৪টি ভোটকক্ষ রয়েছে।