তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
বিয়ের আলোকসজ্জার বিদ্যুৎ বাহিত তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলেন বর, এলাকাজুড়ে নেমে এলো শোকের মাতম। শনিবার (১০ জুন)) ছিল আব্দুর রহিমের গাদ্র হলুদ। আর রবিবার (১১জুন) ছিল তার বিয়ে নবদম্পতির শুরুর দিন। বড়িতে বিয়ের আয়োজনে আনন্দ করার কথা ছিল সবার। কিন্তু এই হৈ-হুল্লোড়ের আয়োজন বিষাদে পরিণত হয়েছে। আকস্মিক একটি দুর্ঘটনা তার জীবন কেড়ে নিয়েছে।
শনিবার (১০ জুন) দুপুরে হৃদয়বিদারক এ ঘটনাটি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ঘড়গাঁও গ্রামে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, কিছুদিন পূর্বে উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের নয়াটিলা গ্রামের মৃত রইছ আলীর মেয়ে ঝর্ণা আক্তারের (১৮) সঙ্গে আব্দুর রহিমের বিয়ের দিন ক্ষন নির্ধারণ করেন পরিবারের সদস্যরা। রোববার তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। গাদ্র হলুদ অনুষ্ঠানের জন্য আলোকসজ্জার বাতি টানানো হয়।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে আলোকসজ্জার এক টুকরো তার ঝুলতে দেখে বৃষ্টিতে ভিজে খালি পায়ে সরাতে যান রহিম। এক পর্যায়ে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর আব্দুর রহিম ওই গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় ব্যাটারিচালিত অটো রিক্সা চালক ছিলেন।
নিহত আব্দুর রহিমের খালাতো ভাই দিপু মিয়া বলেন, রহিম ভাইকে পড়ে যেতে দেখে আমি এগিয়ে যাই। তারে আমি স্পর্শ করতেই আমিও ঝাঁকুনি খেয়ে নিচে পড়ে যাই। পরে আব্দুর রহিমকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে স্বজনরা জানিয়েছেন তিনি মারা গেছেন।
এদিকে বরের আকস্মিক মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় নেমে আসে শোকের মাতম। গাদ্র হলুদ এবং বিয়ের আয়োজন সব বিষাদে পরিণত হয়। বর কনের পরিবারসহ এলাকাজুড়ে এখন চলছে শোকের মাতম। আত্মীয়-স্বজনরা বিলাপ করছেন। বিয়ের জন্য সাজানো আলোকসজ্জার লাইট এবং গেইট খুলেছেন ডেকোরেটর কর্মীরা।
রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, রাজনগর ঘড়গাঁও এলাকায় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে একজন মারা গেছেন বলে খবর পেয়েছি। পরিবারের কেউ থানায় এখনো কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।