সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সর্বজনীন পেনশন চালু হলে টাকা রাখার জায়গা পাব না। পেনশন এ বছর থেকেই চালু হবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের পর তিনি গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আয় আসবেই। আয় বৃদ্ধির এ ছাড়াও নানা পথ তৈরি হচ্ছে। পদ্মা সেতুসহ প্রত্যেকটা সেতু থেকে টোল আদায় হবে।
তিনি বলেন, সংসদের চলতি অধিবেশনেই আয়কর আইন পাস হবে। তার আগে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এর নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) রাজস্ব বৃদ্ধির ব্যাপারে যে পরামর্শ দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানান মুস্তফা কামাল। বলেন, সংস্থাটি সব সময় ভালো পরামর্শ দেয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে খুব সহায়ক হয় তাদের পরামর্শ। তারা সব সময় বিকল্প পথ দেখায়। বিশ্বব্যাংকের চেয়ে বেশি পথ বাতলিয়ে দেয় সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংক অনেকটা সহজ পথে চলে।
জাতীয় সংসদে সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এতে পেনশনের বিষয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনি অঙ্গীকার অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে আমি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কাজটি এরই মধ্যে অনেকটা এগিয়ে এনেছি।
মহান জাতীয় সংসদে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ পাশ হয়েছে। আশা করছি, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকেই বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা সম্ভব হবে। প্রস্তাবিত স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সি একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর পর্যন্ত চাঁদা দেওয়ার সাপেক্ষে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
এতে প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকরাও অংশ নিতে পারবেন। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনারের নমিনি পেনশনারের ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছরের চাঁদা দেওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য হবে এবং এর বিপরীতে কর রেয়াত সুবিধা পাওয়া যাবে। এছাড়া মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার প্রবর্তন প্রধানমন্ত্রীর অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কৌশলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। শিগগির একটি পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের মাধ্যমে এ কর্তৃপক্ষকে কার্যকর করা হবে।