চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে ১২ দিনের সফর শেষে সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন (চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকারবিষয়ক) অলিভিয়ের ডি শ্যুটার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের গুণগত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আইনটি স্থগিত রাখার সুপারিশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত অলিভিয়ের ডি শ্যুটার। তিনি মনে করেন, স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার চর্চা করার কারণে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং শিক্ষাবিদদের এই আইনের আওতায় আটক করা হয়েছে। সেখানেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে নিজের এমন অভিমত তুলে ধরেন তিনি। যারা মানবাধিকারের জন্য লড়াই করেন, তারা ভয়-আতঙ্কের মধ্যে থাকবেন—এটি কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয় বলে উল্লেখ করেন অলিভিয়ের ডি শ্যুটার। যতক্ষণ পর্যন্ত এ আইনের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আইনটি স্থগিত রাখতে সুপারিশ করেন তিনি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪০০–এর বেশি মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে ডি শ্যুটার বলেন, এ আইনে করা মামলায় অনেকে দীর্ঘ সময় আটকে ছিলেন। এসব বিষয় দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে এবং বাংলাদেশ যে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে চাইছে, তাদেরও শঙ্কিত করবে। তিনি বলেন, ‘আপনি জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা বা সামাজিক সুরক্ষা দিতে পারবেন না।’ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে শ্যুটার বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি সরকার, বিশেষ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করেছেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমার সহকর্মীরাও এ নিয়ে (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) কথা বলেছেন। তাই এই আইনের গুণগত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আমি তা স্থগিত রাখার সুপারিশ করছি।’ ডি শ্যুটার তাঁর ১২ দিনের সফরে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও কক্সবাজারেও যান। এসব জেলায় তিনি শ্রমিক, কৃষক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হলেও পরিস্থিতি বেশ নড়বড়ে। এমন পরিস্থিতির পেছনে চরম আয়বৈষম্য ও মূল্যস্ফীতিকে বড় কারণ মনে করছেন তিনি। এ জন্য তিনি সামাজিক সুরক্ষা জোরদারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version