ইবি প্রতিনিধি-
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনার সঙ্গে অসদাচরণের দায়ে চাকুরী থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন কর্মচারী জে এম ইলিয়াস (ইলিয়াস জোয়ার্দার)। গত ১৪ই মে আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত অভিযুক্ত ওই কর্মচারীকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।এর আগে এই ঘটনায় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষিকা উম্মে সালমা লুনা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। এতে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ তুলেন ইলিয়াসের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে ১৪ মে কর্মচারী ইলিয়াসকে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। পরে ঐ শিক্ষিকার স্বামীর পরিচয়ে বরখাস্তকৃত কর্মচারী ইলিয়াসকে হুমকি প্রদান করা হয় বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া এই ঘটনায় নিজের ও নিজের পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে ইবি থানায় জিডি করেন ইলিয়াস। জিডি নং-৬২৬। এছাড়া গত ১৬ মে ইলিয়াস বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস কর্ণারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ওই শিক্ষিকার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তবে দুদিন পর ওই শিক্ষিকা এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করে সার্বিক ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করেন ইলিয়াস। নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি ভুল বুঝাবুঝি বলে দাবি করেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, গত ১১ই মে জরুরি ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়াকে কেন্দ্র করে ইবিতে যে ঘটনাপ্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে তা তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন ও উস্কানিতে ঘটনাটি একটি কালো অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে। আমার সাথে ম্যাডামের স্বামী’র যে কথোপকথন প্রকাশিত হয়েছে তার পূর্বে আমার পরিচয়ে অন্যকেউ তাঁর সাথে কথা বলে তাঁকে উত্তেজিত করেছিল যা আমার সম্পূর্ণ অজানা ছিল। এছাড়াও হোয়াটস অ্যাপ এ মেসেজ পাঠিয়ে তাঁর স্ত্রী-কন্যা’র নিরাপত্তা প্রশ্নের সম্মুখীন করে এবং তিনি আমাকেই সবকিছুর জন্য দায়ী মনে করে বকা-ঝকা করেন। প্রকৃত বিষয়টি জানতে পেরে আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত প্রচারকৃত তথ্য সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং অন্যদেরকেউ অনুরোধ করছি এসকল স্ট্যাটাস সরিয়ে নেয়ার জন্য। এ নিয়ে ইবির এইচ. আর. এম. বিভাগের শিক্ষিকা উম্মে সালমা লুনা ম্যাডাম এবং তাঁর স্বামী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনাব জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করে সার্বিক ঘটনায় আমি দু:খ প্রকাশ করেছি। এদিকে ওই শিক্ষিকা এবং কর্মচারী দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের অনুসারী বলে জানা গেছে। তিনি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড তপন কুমার জোদ্দারের মধ্যস্ততায় বিষয়টি সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী।এদিকে ঘটনার পর কর্মচারীকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়ক কর্মচারী সমিতি। এতে ইলিয়াস-কে বিনা কারণে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় জড়িতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোঃ আব্রাহাম লিংকন বলেন, একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিলো। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। পরে শিক্ষক সমিতি ও শাপলা ফোরামের সেক্রেটারি মহোদয়, সালমা লুনা ম্যাম ও ইলিয়াসসহ আমরা সবাই আলোচনায় বসেছিলাম। সেদিন একে অপরকে ভুল বোঝাবুঝির কারণে উত্তেজিত হয়ে এমন ঘটানার সৃষ্টি হয়েছিল বলে তারাও স্বীকার করল। সেখানে বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গেছে। সমঝোতা হওয়ার পর উভয়ই তাদের অভিযোগ তুলে নিয়েছে।এ বিষয়ে বরখাস্ত হওয়া কর্মচারী ইলিয়াস হোসেনের কাছে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।এ বিষয়ে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষিকা উম্মে সালমা লুনাকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version