প্রথম লেগে হেরে যাওয়ায় গোলের কোনো বিকল্প ছিল না এসি মিলানের। প্রথমার্ধে দারুণ দুটি সুযোগও আসে, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি সাতবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা।
দ্বিতীয়ার্ধে তাদের হতাশা আরও বাড়িয়ে এগিয়ে গেল ইন্টার মিলান। নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের ফের হারিয়ে সিমোনে ইনজাগির দল জায়গা করে নিল চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে।
সানসিরোয় মঙ্গলবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে লাউতারো মার্তিনেসের একমাত্র গোলে জিতেছে ইন্টার। প্রথমার্ধে ২-০ ব্যবধানে জেতা দলটি ৩-০ গোলের অগ্রগামিতায় জায়গা করে নিয়েছে শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে।
২০০৯-১০ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে জায়গা করে নিল ইন্টার। ১৩ বছর আগে সেবারই নিজেদের তৃতীয় ও শেষ শিরোপা জিতেছিল তারা। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠবার ফাইনালে ওঠার পথে দলটি গড়ল দারুণ এক কীর্তি। নিজেদের ইতিহাসে কেবল দ্বিতীয়বারের মতো এক মৌসুমে চারবার হারাল মিলানকে।
যেমন দরকার, মিলানের শুরুটা ছিল তেমনই। প্রথম মিনিট থেকেই সাজিয়ে বসে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা। প্রথম লেগে নিজেদের কাজ অনেকটাই সেরে রাখা ইন্টারের মনোযোগ ছিল প্রতি-আক্রমণে। পঞ্চম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত মিলান। ৩৫ গজ দূর থেকে থিও এরনঁদেজের বুলেট গতির শট বেরিয়ে যায় ক্রসবার ঘেঁষে। ঠিকভাবে হয়তো দেখতেও পারেননি ইন্টার গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা। জায়গা থেকেই নড়েননি তিনি। পাঁচ মিনিট পর ফের বড় বাঁচা বেঁচে যায় ইন্টার। অলিভিয়ে জিরুদের ক্রস ঠেকাতে গিয়ে বলের নাগাল পাননি ওনানা। ফাঁকা জালে বল প্রায় পাঠিয়েই দিচ্ছিলেন ব্রাহিম দিয়াস। প্রায় গোললাইন থেকে হেড করে ক্লিয়ার করেন মাত্তেও দারমিয়ান।
একাদশ মিনিটে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন দিয়াস। সান্দ্রো তোনালির কাটব্যাকে পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পান এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড, কিন্তু নিতে পারেননি জোরাল শট, ঝাঁপিয়ে ঠেকান ইন্টার গোলরক্ষক। ২৪তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে সুযোগ আসে ইন্টারের সামনে। হেনরিখ মিখিতারিয়ানের প্রথম শট প্রতিহত হওয়ার পর অন্যটি বেরিয়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে তুমুল জমে ওঠা লড়াইয়ে ৩৮তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত মিলান। রাফায়েল লেয়াওয়ের দূরের পোস্টে নেওয়া বাঁকানো শট একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে অল্পের জন্য বেঁচে যায় মিলান। হাঁকান কালহানোগ্লুর ফ্রি কিকে মার্তিনেসের হেডে বল মাইক মিয়ার হাত ছুঁয়ে মুখে বাধা পায়। ৪১তম মিনিটে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের বুলেট গতির শট ক্রসবার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও প্রতিপক্ষের রক্ষণে প্রবল চাপ ধরে রাখে মিলান। কিন্তু তাদের আক্রমণের ঝাপটা অনায়াসেই সামাল দিতে থাকে ইন্টার। ৭৪তম মিনিটে এই অর্ধের প্রথম ভালো সুযোগেই এগিয়ে যায় দলটি। প্রতি-আক্রমণে রোমেলু লুকাকুর কাছ থেকে বল পেয়ে প্রথমবার শট নিতে পারেননি মার্তিনেস। পরেরবার বল ফিরে পেয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার।
এই গোলের পর আরও বেশি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে ইন্টার। শেষ দিকের এলোমেলো ফুটবলে আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি মিলান।
২০০৪-০৫ মৌসুমের পর প্রথম ফাইনালের স্বপ্ন নিয়ে লড়াইয়ে নামা এসি মিলানের অপেক্ষা আরও বাড়ল। সঙ্গে হলো তিক্ত এক অভিজ্ঞতা। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইন্টারের বিপক্ষে টানা চার ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হলো তারা। বুধবার (১৭ মে) রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির ম্যাচের জয়ী দলের বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলবে ইন্টার।