ডেভিড ব্রেথ চক্রের ৩ ইরানি নাগরিকসহ ৫জন সদস্যকে ইউএস ডলার ও বিভিন্ন দেশের মূদ্রাসহ
গ্রেফতার করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস টীম।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ঘ্যানাসুর গ্রামের মৃত সারোয়ার শেখের ছেলে খোরশেদ আলম (৫৩), বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম ডুমুরিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে সাইদুল ইসলাম বাবু (৩৫), ইরানের রাজধানী তেহরানের খরাজ গহরদস্ত এলাকার নাদের মাহবুবীর ছেলে খালেদ মাহবুবী (৫৪), তার ছেলে সালার মাহবুবী (১৬) ও বোলভার আজাদী এলাকার লতিফ মাসুফির ছেলে ফারিবোর মাসুফি (৫৭)।
গতকাল রবিবার ( ৭মে) রাতে যশোর শহরের হাটখোলা রোডের আবাসিক হোটেল সিটি প্লাজা ও ঢাকার ভাটারা এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় এবং আজ সোমবার (৮ মে) বিকাল সাড়ে তিনটায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল সাংবাদিক ব্রিফিং এ তথ্য জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার বর্ণী হরিশপুর বাজারে শরিফুল ইসলামের “মরিয়ম স্টোর” নামক মুদিখানা দোকান রয়েছে। তিনি ঐ দোকানে মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে বিকাশ, নগদ রকেট, শিউরক্যাশ, উপায়সহ মোবাইল রিচার্জের ব্যবসাও পরিচালনা করেন। গত ৮ এপ্রিল তার দোকানের সামনে একটা প্রাইভেটকার থামিয়ে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন লোক নেমে ২জন দোকানে প্রবেশ করে। তাদের একজনের মাথায় টুপি, মুখে মাক্স, প্যান্ট, শার্ট পরিহিত ছিল। টুপি পরিহিত লোকটি ৫০ উর্ধ্ব বয়সী এবং দোকানে আসা লোকগুলো আরবী ভাষায় কথা বলে। নারিকেল তেল ক্রয়ের কথা বলে দোকানদার শরিফুলের সাথে হ্যান্ড শেক করে এবং মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে তার মুখের কাছে নেয়।এতে শরিফুল জ্ঞানশূন্য হয়ে পরে এবং লোকগুলোর কথা মত কাজ করতে থাকে। এরপর ঐ দুই ব্যক্তি দোকানে থাকা নগদ প্রায় ৬ লাখ টাকা নিয়ে যায়।
উল্লেখিত ঘটনায় শরিফুলের ছেলে বাদী হয়ে গত ৫ মে অভয়নগর থানার মামলা করেন।
তিনি আরো জানান, যশোর পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)’র ওসি রুপণ কুমার সরকারের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের এসআই নুর ও মামলার তদন্তকারী অফিসার অভয়নগর থানার এসআই বিমান তরফদারের সমন্বয়ে ও বিবি পুলিশের কনস্টেবল আশরাফ হোসেনের দূরদর্শিতায় তদন্তে নামে পুলিশের চৌকস টীম । তারা ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং প্রাইভেটকারের রেজিষ্ট্রেশন নম্বরের সূত্রধরে জড়িতের নাম ঠিকানা শনাক্ত করেন। এরপর গত রোববার ৭ মে রাতে ঢাকার ভাটারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে খোরশেদ আলম (৫৩) ও সাইদুল ইসলাম বাবু (৩৫) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে। তাদের তথ্য মতে যশোরের শহরের হাটখোলা রোডের আবাসিক হোটেল সিটি প্লাজায় রোববার ৭ মে রাতে ঐ ঘটনায় জড়িত ইরানী নাগরিক খালেদ মাহবুবী (৫৪), ফারিবোর মাসুফি (৫৭) ও সালার মাহবুবীকে (১৬) গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, ৪ হাজার ৩ শ’ ৫৯ মার্কিন ডলার, ৩শ’ ২৫ ভারতীয় রুপি, ১৮ লাখ ৮০ হাজার ইরানি মুদ্রা, ১ হাজার ইরাকের মুদ্রা, ১শ’ ৮৫ নেপালী মুদ্রা, ১ হাজার ভিয়েতনামের মুদ্রা ও ৫৪ হাজার ৭শ’ টাকা, ৩টি পাসপোর্ট এবং ৭টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা সংঘবদ্ধ “ডেভিল ব্রেথ” বা শয়তানের নিঃশ্বাস প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা যশোর, খুলনা জেলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতারণা করে আসছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতারণা করে থাকে।
তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।