দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

জেলা প্রতিনিধি: ময়মনসিংহ জেলায় প্রতিদিন গড়ে ১৮টি সংসারে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে। বনিবনা না হওয়া, পরকীয়া, অপরিণতবয়সে বিয়ে, তথ্য প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহ ও স্ত্রীকে রেখে দীর্ঘ প্রবাসজীবনসহ না কারণে এসকল বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।

ময়মনসিংহ জেলা রেজিস্ট্রারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে জেলায় বিয়ে হয়েছে ২০ হাজার ২১৩টি। এর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটেছে ৬ হাজার ৩৯০টি। এই হিসেবে দৈনিক গড়ে ৫৬ বিয়ে এবং ১৮টির মতো বিচ্ছেদ হয়েছে। শতকরা হিসেবে বিচ্ছেদের পরিমাণ প্রায় ৩২ শতাংশ। ২০২১ সালে ১৯ হাজার ৯৩৩টি বিয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয় ৫ হাজার ৯১১টি। ২০২০ সালে ২১ হাজার ৮টি বিয়ের বিপরীতে বিচ্ছেদ ঘটে ৫ হাজার ৫৩২টি।

এছাড়াও অপরিণত বয়সের বিয়েগুলো রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় সেগুলোর বিচ্ছেদের তথ্যও রেজিস্ট্রি অফিসে থাকে না। না হয় এর সংখ্যা আরও বাড়তো।

দেখা যায়, বিচ্ছেদের পর স্বামী-স্ত্রী আলাদাভাবে জীবন শুরু করলেও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে তাদের শিশু সন্তানেরা। পরিবারে বাবা-মায়ের স্নেহ বঞ্চিত এসব শিশুদের মানসিক বিকাশে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মায়েরা সন্তানদের কাছে রাখতে চায়। কর্মহীন মায়েদের ক্ষেত্রে তখন তাদের সন্তানদের সঠিক ভরণপোষণ সম্ভব হয়ে উঠে না।

এ সকল বিচ্ছেদের কারণ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিচ্ছেদের আবেদনপত্রে দেওয়া তথ্যের সাথে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাস্তবতার মিল নেই। কারণ বিচ্ছেদের আবেদন পত্রে বেশকিছু গৎবাঁধা কারণ উল্লেখ করা রয়েছে। নিবন্ধকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ সকল কারণের পাশে টিক চিহ্ন দিয়ে দায়সারা কাজটি করে থাকেন। এক্ষেত্রে প্রকৃত কারণগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে আড়াল থেকে যায়।

ময়মনসিংহে বিচ্ছেদ বৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করে ময়মনসিংহ জজ আদালতের আইনজীবী নাওরীন সুলতানা নীলা বলেন, প্রতিদিনেই বিয়ে-বিচ্ছেদের কয়েকটি ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত হতে হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ছেলে মেয়ের বিয়ের বয়স না হলেও প্রেমে পড়ে আদালতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এসব বেশির ভাগ বিয়েই বছর ছয়মাস যেতে না যেতেই বিচ্ছেদে রুপ নেয়। এছাড়াও পরকীয়া, দারিদ্রতা এবং যৌতুকসহ বেশ কয়েকটি কারণে বিয়ে-বিচ্ছেদ হচ্ছে। বিচ্ছেদ কমাতে হলে কাউন্সিলিং প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায় সমাজে বিচ্ছেদ ভয়াবহ রুপ নেবে।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ময়মনসিংহ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাছিমা খাতুন বলেন, একটা সময় গ্রামের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাভক্তি ছিলো, এখন সেসব আর খুব একটা দেখা যায় না। পাশাপাশি স্মার্টফোনের ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিয়ে-বিচ্ছেদও বাড়ছে। কারণ একটা ছেলে মেয়ে ইচ্ছে করলেই ঘরে বসে একে অপরের সাথে সহজেই যোগাযোগ করতে পারছে। বেশি যোগাযোগ করতে গিয়ে ভালো লাগা থেকে প্রেম বিয়ে অথবা পরকীয়ায় লিপ্ত হচ্ছে।

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূইয়া বলেন, বিয়ে বিচ্ছেদে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং স্ত্রীকে রেখে প্রবাসে দীর্ঘদিন থাকা উল্লেখযোগ্য কারণ। এছাড়াও অপরিণত বয়সে আবেগে বিয়ে হওয়াও বিয়ে বিচ্ছেদের কারণ। এ জেলার অনেক পুরুষ ও মহিলা বিয়ের পর প্রবাসজীবন যাপন করছেন, যার কারণে অন্যান্য জেলার তুলনায় ময়মনসিংহে বিচ্ছেদের পরিমাণ বেশি। কারণ একাকিত্ব দূর করতে অনেক নারী অন্য পুরুষের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। তবে জেলায় বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সবাইকে সচেতনতা করার চেষ্টা চলছে।

 

টিএমবি/এইচএসএস 

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version