অনলাইন ডেস্ক: কৃষক মিন্টু মিয়া। বয়স ৪৫। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়েছেন তিনি। ফলে তার আর পড়াশোনা করা হয়নি। এখন তার ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। ভালোই রোজগারও করেন তিনি। সংসারেও নেই কোনো অভাব। তাই এ বয়সে এসে ছোটবেলার দুঃখ ঘুচাতে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছেন তিনি। শুধু তাই নয় তিনি হতে চান ডাক্তার।
মিন্টু মিয়া জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মালীপাড়া এলাকার মৃত জজ মিয়ার ছেলে। দুই মেয়ে এবং এক ছেলের জনক তিনি। তারা পড়াশোনা শেষ করে এখন চাকরি করছেন।
জানা যায়, সকালে ঘুম থেকে উঠেই মালীপাড়া আদর্শ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় বই হাতে ছুটে চলেন মিন্টু মিয়া। এ নিয়ে আশেপাশের লোকজন নানা কটু কথা বললেও এখন তিনি অনেক তরুণের অনুপ্রেরণা।
মিন্টু মিয়া জানান, তার জন্ম কৃষক পরিবারে। খুব ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়েছেন তিনি। তাই আর পড়াশোনা করা হয়নি। এখন ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। তিনিও রোজগার করেন। সংসারেও নেই অভাব। তাই ছোটবেলার দুঃখ ঘুচাতে এ বয়সে এসে লেখাপড়া করে ডাক্তার হতে চান তিনি।
তিনি আরো জানান, মাদরাসায় যেতে খুব ভালো লাগে তার। সকালে উঠেই গরু-বাছুরকে খাওয়ানো পর আধা কিলোমিটার হেঁটে মাদরাসায় যান তিনি। ক্লাস শেষে আবারো পরিবারের কাজে লেগে পড়েন। এভাবেই দীর্ঘ আট বছর ধরে পড়াশোনা করছেন তিনি।
এদিকে, তার এমন কাজে অনেকেই ভালো চোখে না দেখলেও খুশি মাদরাসার শিক্ষকরা।
মালীপাড়া আদর্শ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষিকা আয়শা খাতুন বলেন, মানুষ চাইলে পারে না এমন কিছু নেই। মিন্টু মিয়া তার জ্বলন্ত উদাহরণ। দীর্ঘদিন ধরেই মিন্টু মিয়াকে দেখছি। তিনি পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী। প্রতিনিয়তই মাদারাসায় আসেন। তাকে দেখে নতুন প্রজন্মের অনেক কিছুই শেখার আছে।
মালীপাড়া আদর্শ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, খুব সকালেই স্কুলে ছুটে আসেন তিনি। তার ইচ্ছে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবেন তিনি। তার এমন আগ্রহে বিদ্যালয়ের সবাই খুশি।
সম্প্রতি তাকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন ‘চলো হাত বাড়াই ফাউন্ডেশন’ নামে এক সামাজিক সংগঠন। তাকে উৎসাহিত করতে হাতে তুলে দেন খাতা-কলম।
টিএমবি/এইচএস