স্টাফ রিপোর্টার : আঠারো ঊর্ধ্বো প্রেমিকা ঢাকায় বাসা বাড়িতে কাজ করতেন। আর প্রেমিক নেত্রকোনার কলমাকান্দার খানৈ ইউনিয়নের চৌরাস্তা এলাকার মৃত আইয়ুব আলী খানের ছেলে আরিফ খান (২১) গাজীপুরে গার্মেন্টেসে চাকুরি করেন। দুজনের বাড়ি একই উপজেলায় হলেও ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয়। চার বছরের প্রেমের সম্পর্কে প্রেমিকা নিজের সবটুকু উজার করে দেন প্রেমিকের কাছে। এবার ঈদের ছুটিতে দুজনে বিয়ে করার কথা ছিল। বিয়ের জন্য প্রেমিক তার পরিবারকে রাজি করাতে প্রেমিকাসহ অভিভাবককে নিজ বাড়িতে ডেকে আনেন। রাত ১টা পর্যন্ত চলে দুই পরিবারের আলোচনা।
পরে শনিবার (২৯ এপ্রিল) দিনের বেলায় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে মীমাংসার আশ্বাসে প্রেমিকার অভিভাবক রাতেই বাড়িতে ফেরত চলে আসেন। ওই নারী স্ত্রীর মর্যাদার দাবীতে থেকে যান প্রেমিকার বাড়িতে। এরপর প্রেমিকার উপর চলে প্রেমিক পরিবারের লোকজনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। অত্যাচারের একপর্যায়ে প্রেমিকা দৌঁড়ে আশ্রয় নেন প্রতিবেশির বাড়িতে।
৯৯৯ ফোন পেয়ে শনিবার সকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রেমিক পালিয়ে যান। পরে প্রেমিকা কলমাকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।
হাসপাতালে এমন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী আরও জানান, চার বছরের প্রেমের সম্পর্কে নিজের দেহ ও মন দেওয়ার পাশাপাশি বিয়ের গহনা ও ব্যবসার করার জন্য জমানো এক লাখ ২০ হাজার টাকাও আরিফের হাতে তুলে দিয়েছেন। এখন স্ত্রী মর্যাদা না পেলে সমাজে মুখ দেখাবো কী করে। আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কিছু রইল না বলে জানান প্রেমিকা।
প্রেমিক আরিফের মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পরে তার মামা কছিম উদ্দীনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ফেসবুকে মেয়ে ছেলের সাথে কথা বলছে শুনেছি। গত শুক্রবার মেয়ে ভাগিনার বাড়িতে চলে এসেছে। আসার পর অনেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু তাদের চার বছরের সম্পর্কের জোরালো কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। যেহেতু আমি গ্রামের বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করি ও ভাগিনা থাকে ঢাকায়। এসব বিষয়ে ভাগিনা মামার কাছে প্রেমের বিষয়দি শেয়ার করার কথা নয়। প্রেমের বিষয়টি জানার পর গত ২৭ রমজানে মেয়ের চাচার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। এদিকে ভাগ্নি জামাই (ছেলের
ভগ্নিপতি) সাথে কথা বললে ভাগ্নি জামাই আমাকে বলে মামা আপনি ছেলের মামা। ভাগিনা কাছ থেকে তথ্য বের করতে পারবেন না। ভাগ্নি জামাই ছেলের সাথে কথা বলে শেষ রমজানে মেয়ের চাচার সাথে কথা বলে একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে। হঠাৎ গতকাল মেয়ে ছেলের বাড়িতে আসে। রাতেই মেয়েকে তার চাচাসহ অভিভাবকের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।
কলমাকান্দা থানার ওসি মো. আবুল কালাম জানান, ৯৯৯ ফোনে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তীতে নিজেদের পরামর্শে হাসপাতালে যান আঠারো উর্ধ্বো ওই প্রেমিকা। যেহেতু ফেসবুকে পরিচয় ভুক্তভোগী সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে মামলা করতে পারবে।