যে ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে হাজারো বাঙ্গালী যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এ ভাষার স্বাদ গ্রহন করছি। আর এ ভাষা আন্দোলনের অন্যতম তিন ভাষা সৈনিক ছিলেন, তারা হলেন ছালেহা বেগম, রওশন আরা বাচ্চু ও হোসনে আরা বেগম। একই মায়ের গর্ভের তিন কন্যা বাবার অনেক আদরের ছিলেন। বড় বোন রওশন আরা বাচ্চু ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসাবে ছাত্র রাজনীতি ও তখনকার চলমান মাতৃভাষা আন্দোলনের সাথে তিনি প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। মেজো বোন হোসনে আরা বেগম ১৯৪৮ সালে পিরোজপুর আরবান গার্লস স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। জিন্নাহ ঢাকায় এসে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণার প্রতিবাদে ১৯৪৮-এর ১১ মার্চ স্কুল থেকে ধর্মঘটের আহ্বান করায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ছোট বোন সালেহা বেগম ১৯৫২ সালে ময়মনসিংহ মুসলিম গার্লস হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন, যখন ১৯৫২ সালে ময়মনসিংহ মুসলিম গার্লস হাই স্কুলেও কালো পতাকা উড়ানো হলে, যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ছালেহা বেগম একাই। সকলের বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে কালো পতাকা ওড়ালেন। ফলে ছালেহা বেগমকে স্কুলের নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গের কঠিন শাস্তিস্বরূপ তিন বছরের জন্য স্কুল থেকে বহিষ্কার ঘোষণা করা হয়। আর এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ পেয়েছে বাংলাভাষা, নিঃশ্বাসের মাতৃভাষা।
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার ঊছলাপাড়া গ্রামে জন্ম এ তিন ভাষা সৈনিকদের বাবার দেওয়া প্রাপ্ত সম্পত্তি গুলো স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যু গ্রাস করার পায়েতারা করছে এর মধ্যে শতবর্ষ পুরনো ঐতিহ্যবাহী বাড়ি ও পুকুর রয়েছে। উত্তরাধিকারীদের অনেকেই রাজধানী ঢাকা এবং দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এ সুযোগ কিছু স্থানীয় ভূমিদস্যু বর্তমান সরকারের নাম বিক্রি করে দখলের পায়তারা করছে। করোনাকলীন সময়ে ভাষা সৈনিকদের ওয়ারিশগনের চলাচল সীমিত ছিল বলে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেখানে লুটপাট করার চেষ্টা করছে ভূমিদস্যুরা। এই বংশের অন্যতম উওরাধিকারী জালাল মো: আজরফ ও আর এক উত্তরাধীকারী ভাষাসৈনিক ছালেহা বেগমের বড় ছেলে সৈয়দ শাকিল আহাদ এই প্রতিনিধিকে জানান, ভাষাসৈনিক তিন বোনের ঐতিহ্যে সম্ভৃদ্ধে শতবর্ষী এই বাড়ীর ও পুকুরের সংরক্ষন এ প্রশাসন ও স্থানীয় জনগনের সহায়তা চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। যাতে তিন ভাষা সৈনিকদের নামে ভাষা অডিটরিয়াম ও জনসাধরনের জন্য বিভিন্ন স্থাপনা করতে পারে।