ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উপজেলা বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দশজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে (২৭ এপ্রিল) নাসিরনগর কলেজ মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা বিএনপি ও আহতদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। গত কিছুদিনে কেন্দ্রীয় বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা একরামুজ্জামান সুখনের সমর্থক ও উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকেরা বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার হাতাহাতি ও বাকবিতন্ডায় জড়িয়েছে। সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দুপক্ষের কর্মীরা উপজেলা সদরে সরকারি কলেজ মোড়ে মুখোমুখি হলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল বুধবার (২৬ এপ্রিল) উপজেলায় বিএনপির সভাপতির অনুসারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাহআলম পাঠানকে হুমকি প্রদান করে একরামুজ্জামান সুখনের অনুসারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এনামুল হক সুমন ও তার সাথে থাকা নিউটন ও সাদেক।

হুমকির বিষয়টি গতকাল বুধবার বিকেলে শাহআলম পাঠান উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের জানালে, বিএনপির একপক্ষের লোকজন উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এসে অবস্থান নেয়। এ সময় একরামুজ্জামানের অনুসারীরা তার নিজস্ব বাসভবনে অবস্থান করছিল। একরামুজ্জামানের বাসভবন ও উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় কাছাকাছি হওয়ায় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। তবে ঐদিন বড় ধরণের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এরই রেশ ধরে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা সদরের দাঁতমন্ডল গ্রাম থেকে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান শেষে নাসিরনগর সদরে ফেরার পথে বিএনপির দুইপক্ষ মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এসময় দুই পক্ষের তিনজন গুরুতর আহতসহ দশজন আহতের খবর পাওয়া গেছে।

গুরুতর আহতরা হলেন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এম নাসির উদ্দিন, সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হান ও বিএনপি কর্মী শাহ মোহাম্মদ ইসমাইল।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান বলেন, নাসিরনগর উপজেলা বিএনপিতে কোন বিরোধ নেই। আমরা দেশনায়েক তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি। ছাত্রদলের গুটিকয়েক নেতাকর্মীর মধ্যে পূর্ব শত্রুতার জেরে এ সংঘর্ষ হয়ে থাকতে পারে।

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা একরামুজ্জামান সুখন জরুরি মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, আজ দুপুরে নাসিরনগর কলেজ মোড়ে বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version