চুরি, ক্ষতিসাধন ও প্রাণনাশের হমকি প্রদানের অভিযোগ এনে কক্সবাজার শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শহর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এই মামলা রুজু করা হয়। ওয়াল্ড বীচ হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার শেখ আবদুল্লাহ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নং-৪৪/২১৭।
মামলার বাদী শেখ আবদুল্লাহ পৌরসভাধীন ৩ নং ওয়ার্ডের নতুন বাহারছড়া এলাকার মৃত আবু ছৈয়দের ছেলে।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল শহরের ১২ নং ওয়ার্ডের কলাতলী ডলফিন মোড় এলাকার ওয়াল্ড বীচ হোটেলে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে চুরি, ক্ষতিসাধন ও প্রাণনাশের হমকি প্রদানের অভিযোগ আনা হয় ৩১ জনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়। ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৩ টায় দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে
হোটেলের সিকিউরিটি ও ম্যানেজারকে মারধর করে। শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক মনিরের নির্দেশে ছাত্রলীগ নেতা সায়েম ফ্রন্ট ডেস্কের ক্যাশের ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ও ২ টি মোবাইল চিনিয়ে নেয়। এছাড়াও অন্য এক আসামী ক্যাশ ড্রয়ার থেকে হোটেলের স্টাফদের বেতন-বোনাসের ৬ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা চিনিয়ে নেন। হোটেলের অন্যান্য স্টাফদেরও মারধর করে হোটেল থেকে বের করে দিয়ে হোটেল দখলে নেয়। এসময় বিভিন্ন জিনিসপত্রও ভাংচুর করে তারা।
হোটেল থেকে বের না হলে মারবে, কাটবে এবং খুন করবে বলে হুমকি দিয়ে সকল স্টাফদের জোর করে বের করে দেয়।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার আসানীরা হলেন, শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক
মনিরুল হক মনির, শহর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির, ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান সায়েম, খাইরুল ইসলাম জিশান ও রফিকুল ইসলামসহ ১১ জনকে। এতে প্রধান আসামি করা হয়-
ঢাকা বনানীর ৮ নং রোড়ের বাসিন্দা দেলোয়ার এইচ খানকে। এছাড়া আরো ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ওয়াল্ড বীচ হোটেলের দখল নিতে গিয়ে চুরি, ক্ষতিসাধন ও প্রাণনাশের হমকি প্রদানের অভিযোগ এনে ৩১ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের আটক করতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা কটোরহস্তে দমনে পুলিশ বদ্ধপরিকর। এতে কারো প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোন ছাড় নেই।
একটি সুত্র বলছে, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের নেতৃত্বে ২-৩ শ ছাত্রলীগ কর্মী ও শহরের বিভিন্ন এলাকার দাগী আসামীদের নিয়ে হোটেলটি দখল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কলাতলী মোড় এলাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চাপা আতংক বিরাজ করছে। এমনকি তারা দিনে ও রাতে ৮টি গ্রুপে ভাগ হয়ে টাকার বিনিময়ে ভাড়ায় হোটেলে ডিউটি বসিয়েছে- ছাত্রলীগের শহরের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মীদের দিয়ে। মারুফ আদনান তার গ্রুপের কর্মীদের দিয়ে এমন জগণ্যতম কাজ করাচ্ছে। এর আগেও বদরমোকাম এলাকায় জায়গা দখল করতে গিয়ে মামলার আসামী হয়েছে মারুফ আদনানসহ ছাত্রলীগের তার অনুসারী কয়েকজন কর্মী। এটা নিয়েও জেলাজুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। এটি ছাড়াও শহরে বেশ কয়েকটি জায়গা ও হোটেল দখলে মারুফ আদনান
তার গ্রুপকে ভাড়ায় খাটানো হয়েছে।
এতে করে জেলা জুড়ে সাধারণ মানুষের মনে ছাত্রলীগকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। তাই মারুফ আদনান সহ তার গ্রুপের কর্মীদের প্রতি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীরা।