মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক যুবতীকে পালাক্রমে গণধর্ষণের অভিযোগে শ্রীমঙ্গল থানায় শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ধর্ষণ আইনে একটি মামলা দায়েরের শেষ পর্যন্ত রোববারে আরও দুইজনসহ মোট ৪ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।
এর আগে গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে নিজেদের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে মর্মে পুলিশ সূত্র মতে জানা যায়।
জানা য়ায়,মামলা দায়েরের পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে বাকিরা পালিয়ে যায়।
পরে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান ও ১ নং আসামী শ্রীমঙ্গলের মাজদিহি এলাকার মৃত রাজ্জাক মিয়ার ছেলে শহীদকে রাজনগরের জালালপুর এলাকা হতে ও সোমবার (১৭ এপ্রিল) ভোরে ২ নং ধর্ষক একই এলাকার ফয়রাজ মিয়ার ছেলে ফয়েজ মিয়াকে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার চৌমুহনা থেকে গ্রেপ্তার করেন। আগে ঘটনার মুল হুতা সিএনজি চালক ওসমানী নগর মতিরগাও মতলেব মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া ও অপর সহযোগী শ্রীমঙ্গল উপজেলার মাঝদিহি চা বাগানের ৬ নং সেকশনের রাম গোবিন্দ নুনিয়ার ছেলে হৃদয় নুনিয়াকে গ্রেপ্তার করে গত (১৫ এপ্রিল) শনিবারে পুলিশ স্কট এর মাধ্যমে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
মৌলভীবাজার আদালতে হৃদয় নুনিয়া এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী মূলক প্রদান করেছেন মর্মে পুলিশ সুত্রে জানা যায়। পরে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
মামলা ও পুলিশের সুত্রের বরাতে আরও জানা যায়,গত শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে কুলাউড়া উপজেলার এক যুবতীর ছদ্মনাম শেফালি বেগম (২৩) তিনি সিলেটের ওসমানী নগর থানার গোয়ালাবাজারে হবু স্বামীর সাথে দেখা করতে গিয়ে পুনরায় কুলাউড়া ফিরে আসার সময় সিএনজি চালকের খপ্পরে পরলে কুলাউড়ার গাড়িতে তুলে দিবে বলে ওই মেয়েকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের উপজেলার ভৈরবগঞ্জ বাজারে নিয়ে আসে। ভৈরবগঞ্জ বাজারে আসলে মাঝদিহি চা বাগানের সহযোগী সহ মোট আরও ৫ জন মিলে ভিকটিমকে চা বাগানে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে পালাক্রমে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী পালাক্রমে ধর্ষণ করে বলে মামলায় এজেহার সূত্রে জানা যায়। অভিযোগকারী নারী নিজেই। এঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানার মামলা নং-২১ তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২৩।
এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজনের সূত্রে জানা যায়, মাজদিহি পাহাড়ে বেশ কয়েকটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে নারীদের নিয়ে আসে। বিভিন্ন রকম অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত। এখানে নারী মদ জুয়সহ বিভিন্ন রকমের অপরাধ মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এদেরকে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সহযোগিতা করে থাকেন। এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, নাম প্রকাশ করলে এলাকায় থাকা দুস্কর হয়ে যাবে।
একদিকে পাহাড়ি এলাকা যোগাযোগের অবস্থা ভালো হওয়ায় কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গল থেকে বিভিন্ন রাস্তায় প্রবেশ করা যায়। এই সুবিধাটা নিয়ে অপরাধীরা এখানে আস্তানা করছে। শুধু নারী নয় মাদক ব্যবসায়ীরাও এই এলাকাটিকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে এখানে কারা পর্যটক আর অনৈতিক বা মাদক ব্যবসায়ী বোঝা বড় মুশকিল। ফলে ৩টি উপজেলার মাদক কারবারি ও জুয়ারীরা এখানে রমরমা ও তৎপর।
গণধর্ষণ মামলার সর্বশেষ শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, ঘটনার সংবাদ আমাদের কাছে আসার সাথে সাথেই দুই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। তাদের বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ইতিমধ্যে আরও দুই জন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আরও যারা পলাতক তাদেরও গ্রেপ্তারের জন্য তৎপর আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলমান।