অনলাইন ডেস্ক: স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের পরিকল্পনায় প্রেমের ফাঁদে ফেলার পর কৌশলে নিজের বাসায় নিয়ে তোলা হয় নগ্ন ছবি। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোবাইল ও বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিতেন তারা।
এমনই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে পাবনা শহর থেকে অভিযুক্ত স্বামী ও স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পাবনা পৌর এলাকার রাধানগরের ময়দানপাড়া মহল্লার মোশারফ শেখের ছেলে শহরের ফজলুল হক রোডের মুক্ত টেইলার্সের মালিক মুন্না হোসেন এবং তার স্ত্রী মুক্তা খাতুন।
পুলিশ সুপার জানান, যশোর থেকে এসে পাবনায় পাটের ব্যবসা করতেন ইসমাইল হোসেন। মাঝে অভিযুক্তদের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরবর্তীতে মুক্তা খাতুন সুপরিকল্পিতভাবে বাদীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করেন। সেই সুযোগে পরিকল্পিতভাবে ইসমাইল হোসেনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ধার নেন তিনি। পরবর্তীতে ধারের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে তাকে গত ২০ মার্চ রাধানগর ময়দানপাড়ায় আসামিদের নিজস্ব বাসায় নিয়ে যান।
বাসায় নিয়ে গিয়ে বাদীকে ডাইনিং রুমে আটক করে মুন্না হোসেন এবং মুক্তা খাতুনসহ তাদের ২/৩ জন সহযোগীদের মাধ্যমে জোরপূর্বক ইসমাইলের নগ্ন করে ছবি তুলে ও কিল ঘুষি, চড় থাপ্পর, লাথি, কাঠের বাটাম দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারধর করেন।
তিনি আরও জানান, একপর্যায়ে আসামিরা ইসমাইলকে প্রাণে মেরে ফেলার এবং নগ্ন ছবি ভাইরাল করার ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা এবং বিকাশের মাধ্যমে আরো ৭৩ হাজার টাকা মোট ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা আদায় করেন এবং ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। পরবর্তীতে ২০ হাজার টাকা না দিলে নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেন।
এর প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) ডিবি অফিসে অভিযোগ দিলে ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ওইদিনই জেট এল প্লাজায় অবস্থিত মুক্ত টেইলার্স থেকে তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় বলে জানান আকবর আলী মুনসী।
সংবাদ সম্মেলনে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ-প্রশাসন) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান, ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী, পাবনা ডিবির ওসি এমরান মাহমুদ তুহিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
টিএমবি/এইচ