হযরত আলী, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের প্রাণ কেন্দ্রে মহিষখোচা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশেই বাদশা নামের একটি গুল ফ্যাক্টরির তামাক পাতা ও ডাটা খোলা আকাশের নিচে চূর্ণ করা হচ্ছে। এতে তামাকের ধুলোয় শ্রমিকসহ ওই এলাকার পুরো জনপদ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এলাকার পরিবেশ, হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য। পথচারী থেকে শুরু করে বাজারের ব্যবসায়ীরাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মহিষখোচা বাজারে গড়ে ওঠা এ গুল ফ্যক্টরির ও উপর।
বাদশা গুল ফ্যাক্টরির মালিক মহিষখোচা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য রহমত আলী। ফ্যাক্টরিতে মান্ধাতা আমলের পদ্ধদিতেই তামাকের পাতা ও ডাটা চূর্ণ করা হচ্ছে অনেকটাই খোলা আকাশের নিচে। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া কষ্টকর। অন্ধকারে ঢেকে যায় পুরো এলাকা।
পথচারীদের অভিযোগ, বাতাসে তামাক পোড়ার তীব্র গন্ধ। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। কিছুক্ষণ অবস্থান করলেই বমি বমি ভাব আসে।
বাজারের দোকানীরা বলেন, এখন রাতে তামাক ভাজে। সাধারণত রাতে হাট/বাজার থাকায় লোকারণ্য বেশি হয়। যখন তামাক ভাজে তখন পোড়া গন্ধে আমরা দোকানে থাকতে পারি না। ওই সময় কাস্টমার আসলে গন্ধের কারণে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যায় কেনাকাটা না করেই চলে যায়। এতে করে ক্ষতি মুখে পড়ছি আমরা। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।
গুল ফ্যাক্টরির আশেপাশের লোকেরা বলেন, তামাকের তীব্র গন্ধে আমরা ঘরে থাকতে পারি না। ছোট শিশু এবং বৃদ্ধদের শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আমরা অনেক বার প্রতিবাদ করলেও লাভ হয়নি।
গুল ফ্যাক্টরির মালিকের ছোট ছেলে রেজাউল করিম বলেন, আমাদের ফ্যাক্টরির সব কাগজ-পত্র করা আছে৷ আগে আমরা দিনের বেলায় তামাক ভাজছিলাম পড়ে কাস্টমস অফিসারের সাথে কথা বলে জনসাধারণের কষ্ট হওয়ার কারণে আমরা এখন রাতে তামাক ভাজি। জনসাধারণের বা দোকানদারের সমস্যা হলে আমরা ফাঁকা জায়গায় ফ্যাক্টরি নিয়ে যাবো।
মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ সারওয়ার আলম বলেন, বাজারে ভিতরে গুল ফ্যাক্টরি তামাক যখন ভাজা হয় তখন চারদিকে গন্ধটা যায় এমনি মহিষখোচা স্কুলেও গন্ধের কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করতে পারে না অসুস্থ হয়ে যায়। আমি ২০১৫ সালে গুল ফ্যাক্টরি নিয়ে তৎকালীন ইউএনও মহোদয় কে রিপোর্ট দিয়েছিলাম অনেক নিউজ হয়েছিলো। তার পরও কোনও সুফল পাইনি।
মহিষখোচা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আনিছার রহমান বলেন, গুল ফ্যাক্টরির কারণে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে এবং এলাকার মানুষ ওখানে থাকতে পারছে না। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেয়।
মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, তামাক ভাজার কারনে বাজারে মানুষের অনেক সমস্যা হয় এমন অভিযোগ আমি পেয়েছি। রমজান মাসে আরও বেশি সমস্যা সম্মুখীন হয় মানুষ। তারা যাতে ফ্যাক্টরিটা ফাঁকা জায়গায় স্থানান্তর করে এটা জনগণের দাবি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিআর সরোয়ার বলেন, আমি তছিলদার পাঠিয়েছি ঘটনার সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ উল্লাহ বলেন, জনবহুল এলাকায় গুল ফ্যাক্টরি করার কোনও নিয়ম নেই বা লাইসেন্স এবং ছাড়পত্র দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই। আমি খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের একাধিকবার কল এবং মেসেজ করা হলেও কোন ও উত্তর পাওয়া যাইনি।
টিএমবি/এইচএসএস