স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) নেত্রকোনা কার্যালয়ের এসএমসিআইএফ (ক্ষুদ্র মাইক্রো ও কুটির শিল্প ফাউন্ডেশন) সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. নুরুল হুদা ঋণ প্রদানের বিপরীতে নেন অর্থ। ঘুষ দেওয়ার পরেও ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাগণ পাননি তাদের কাঙ্খিত ঋণ। আরও অভিযোগ উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে ওই কর্মকর্তা মামলা দেওয়ার হুমকি দেন এবং কর্মকর্তা নিজে মাদক সেবনের সাথে জড়িত।
ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনেন নেত্রকোনা দুর্গাপুরের সালমাকান্দা গ্রামের মৃত আ. গফুরের ছেলে মো. আবুল কাসেম এবং সদর উপজেলার সাদুল্লাচর গ্রামের মো. নিজাম উদ্দিন।
মো. আবুল কাসেম তার অভিযোগে উল্লেখ, ‘পলাশ ডেইরী ফার্ম’ উন্নয়নে তিন লক্ষ টাকা ঋণের জন্য বিসিকের এসএমসিআইএফ কার্যালয়ের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. নুরুল হুদার সাথে যোগাযোগ করেন। একজন সরকারি চাকুরিজীবির গ্যারান্টার, খালি (ব্ল্যাঙ্ক) চেকের পাতা, নাম জারিসহ জমির মূল দলিল জমা দিতে না পারলে হেড অফিস হতে ঋণের অনুমোদন খরচ লাগবে জানায় সম্প্রসারণ কর্মকর্তা। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে জরুরী প্রয়োজনে ঋণ প্রাপ্তিতে কর্মকর্তার নিকট কাকুতি-মিনতি করেন। ফাইল প্রস্তুত ও হেড অফিসের অনুমোদনে ৫০ হাজার টাকা দাবীর প্রেক্ষিতে সুদ করে নুরুল হুদার কাছে এ টাকা দেন।
চলতি বছরের গত ২৮ মার্চ ঋণের বিষয়ে যোগাযোগ করলে তিনি (নুরুল হুদা) হুমকি-ধামকি দিয়ে বলেন- ‘মামার বাড়ির আবদার নাকি? হেড অফিস থেকে অনুমোদনের পরে যোগাযোগ করিস’। এরূপ আচরনে ৫০ হাজার টাকা ফেরত চাইলে তা দিতে অস্বীকার করেন। পরে উদ্যোক্তা জানতে পারেন সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাদক সেবনের সাথে জড়িত। প্রতিকার চেয়ে গত ৫ এপ্রিল জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দেন উদ্যোক্তা আবুল কাসেম।
আরেক উদ্যোক্তা ‘নিজাম মৎস্য চাষ প্রকল্প’ নামের স্বত্ত্বাধিকারী মো. নিজাম উদ্দিনের একই অভিযোগ, পুঁজির স্বল্পতায় তিন লক্ষ টাকা প্রয়োজনের বিষয়টি নিয়ে মো. নুরুল হুদার সাথে যোগাযোগ করেন। উদ্যোক্তা আবুল কাসেমের মতো একই ধরণের কাগজপত্রের প্রয়োজনীয়তা জানায় কর্মকর্তা। এসব কাগজপত্র দিতে না পারলে ঋণের অর্ধেক টাকা তাকে (নুরুল হুদা) দিলে এক সপ্তাহের মধ্যে ঋণের ব্যবস্থা করে দিবেন। বিশ্বাস স্থাপনের জন্য ৪৫ হাজার টাকা জমা রাখতে বলেন। ঋণের প্রয়োজনে সে টাকা নুুরুল হুদার কাছে জমা দেন নিজাম। চলতি বছরের গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি (নুরুল হুদা) নিজাম উদ্দিনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মামলা মোকদ্দমার হুমকি প্রদান করেন। এ নিয়ে গত ১ মার্চে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী পরিচালক (এসএমসিআইএফ) ও যুগ্মসচিব (প্রশাসন) বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেন নিজাম।
এ সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিসিকের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. নুরুল হুদা বলেন, তিন মাস হয়েছে এই কর্মস্থলে যোগদান করেছি। নিজাম উদ্দিনের সাথে আমার কখনো দেখা ও কথা হয়নি। গত এক-দুই মাস যাবত নিজামের নামটি শোনছি। এখন আবুল কাসেমের নামটি আপনার (প্রতিবেদক) কাছ থেকে জানতে পারলাম। সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট অভিযোগ। উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কে বা কাহারা করেছে। আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি গেছে। যে গুলোর কোন ভিত্তি নেই।