স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় সরকারি খাদ্য গুদামের প্রবেশদ্বার ও সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন সরকারি জায়গায় জোরপুবর্ক ঘর নির্মানের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
সোমবার (১০ এপ্রিল) দুুপুরের দিকে খাদ্য কর্মকর্তা রুবাইদুর রানা অভিযোগের দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিবেদককে বলেন, এর অনুলিপি নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং ময়মনসিংহের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘর নির্মানকারী এরশাদ মিয়া খালিয়াজুরীর মৃত সমির মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। গত কয়েক মাস আগে খালিয়াজুরী উপজেলা আ.লীগের দুই সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরিতে সাংগঠনিক সম্পাদক-৩ পদে তার (এরাশাদ) নাম উপজেলা কমিটিতে রাখার প্রস্তাবনা দেওয়ার কথা জানা গেছে।
অভিযোগে উল্লেখ, খাদ্য বিভাগের নির্মান নীতিমালা অনুয়ায়ী খাদ্য গুদামের পাঁচ ফুট জায়গা বাদ দিয়ে নিরাপত্তার জন্য সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হয়। গুদামের বাহিরে প্রবেশদ্বারের বাম পাশে সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন সরকারি জায়গায় এরশাদ মিয়া ৩৬ ফুট লম্বা ও ১৬ ফুট প্রশস্থ টিনের ঘর নির্মান শুরু করেন। নিরাপত্তা প্রহরী রাজন তালুকদার ঘর নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্মানকারী (এরশাদ মিয়া) জনৈক হরেকৃষ্ণ দাসের কাছ থেকে গুদামের সীমানা প্রাচীর ঘেষা জমিটি বন্ধক নিয়েছেন বলে জানায়। এখানে ঘর নির্মান হলে প্রধান ফটক ও গুদাম চত্ত্বরের ৮০ ভাগ স্থান প্রধান সড়ক থেকে অন্ধকারে (আড়ালে) চলে যাবে। বোরো মৌসুমে বিভিন্ন ধান ভর্তি ট্রলি গুদামের প্রবেশদ্বারের দুই পাাশে দাঁড়িয়ে থাকে। তাছাড়া বর্ষাকালে গুদাম চত্বরে বৃষ্টির জমানো পানি প্রবেশদ্বারের বাম পাশ দিয়ে (পূর্ব দিক) গর্তে পতিত হয়। অন্যথায় গুদাম চত্বরে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।
নির্মানকারী এরশাদ মিয়া জানান, অভিযোগটি মিথ্যা, ভুয়া ও বানোয়াট। আরওআর, সিএস ও বিআরএস কাগজ মূলে এখানে ৬৯ শতাংশ জায়গা হরেকৃষ্ণ দাসের। তিনি এর কাগজপত্র ইউএনও এবং এসিল্যান্ড বরাবরে জমা দিয়েছেন। হরেকৃষ্ণ তার জায়গায় ঘর করছে। আমি রড, সিমেন্ট ব্যবসায়ী হিসেবে তার কাছে সিমেন্টের খুঁটিসহ নির্মানসামগ্রীর মালামাল বিক্রি করছি।
একাধিকবার ফোন না ধরায় এ ব্যাপারে খালিয়াজুরী ইউএনও রুয়েল সাংমার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে উপজেলার সহকারি কমিশনার ভুমি (এসিল্যান্ড) মো. সামিন সরোয়ারের সাথে কথা হলে তিনি সরকারি জায়গার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এরশাদ মিয়াকে ডেকে নিজ খরচ ও উদ্যেগে সরিয়ে ফেলার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় এই ঘরসহ এর আশেপাশে আরও কয়েকটি ঘর গড়ে উঠেছে সেগুলোর বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল খালিয়াজুরীর খাদ্য গুদামের প্রবেশদ্বার ও সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন সরকারি জায়গায় টিনের ঘর নির্মানের কাজ শুরু হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৪ এপ্রিল ‘সরকারি খাদ্য গুদামের প্রবেশদ্বারে জোরপূর্বক অবৈধ স্থাপনা নির্মান’ বিষয়ে ইউএনও বরাবরে অভিযোগপত্র জমা দেন উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রুবাইদুর রানা।