নীলফামারী কলেজ রেলস্টেশনের পুকুরের ধারে ছোট টিনের চালায় বসবাস করেন মৃত মোজাম্মেল হকের স্ত্রী ভূমিহীন ষাটোর্ধ্ব রোজিনা বেগম। দেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রচার হয় রোজিনার সেই অসহায়ত্বের কথা। প্রশাসন একটি নিরাপদ ঠিকানা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আবেদন করতে বললেও চূড়ান্ত যাচাই বাছাই শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের আওতায় আসেননি তিনি।
এরই মধ্যে নীলফামারী সদর উপজেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রাও।
স্থানীয় জিকরুল ইসলাম বলেন, এমন অসহায় বৃদ্ধা যদি ঘর না পায় তাহলে পায় কে? তারা ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন, তাহলে উনি কি ভূমিহীন না? একদিন খোঁজ নিতে আসছিল উপজেলার লোকজন, আমরা দেখিয়ে দিলাম। ভেবেছিলাম এবার অন্তত রোজিনা চাচি শান্তি পাবেন। কিন্তু ওই দেখে যাওয়াই শেষ।
প্রতিবেশী নুর নাহার বেগম বলেন, উনি এভাবে কষ্ট করে থাকেন। কিছুদিন আগে শুনলাম যে লোক আসছিল, উনি ঘর পাবেন। কিন্তু শুধু লোক দেখানো যাচাই বাছাই করে গেছে, ঘর দেয়নি। এটা কেমন কথা। আমরা চাই উনি যেন একটা ঘর পান। শেষ বয়সটা যেন শান্তিতে থাকেন।
রোজিনা বেগমের মেয়ে পেয়ারি বেগম বলেন, যখন যাচাই করে গেল, আমি ভাবছিলাম যে ঘর পাবেন। কিন্তু সবাই পেলেও আমার মা পাননি। ঝড়বৃষ্টির সময় এখন। জানি না আমার মায়ের ভাগ্যে কী আছে। তবে আমার মায়ের মতো মানুষ ঘর না পেলে কারা পাচ্ছে ঘর এটাই আমরা বুঝি না।
রোজিনা বেগম বলেন, ‘সেদিন যে মানষে আসিল তা কোটে মোর ঘর। ওইটা ঘরত কি থাকা যায় কনতো। মুই কি এনা শান্তি পাইম না? নাকি না দিবে কাহো ঠাঁই। সবায় পায়, মুই কেনে না পাই।’
এ বিষয়ে নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার বলেন, আমরা প্রথম পর্যায়ে ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীনদের যে তালিকা করেছি তাদের সবাইকে ঘর দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোনো ভূমিহীনের খোঁজ পেলে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, নতুন ভূমিহীন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানাবিধ কারণে ভূমিহীন পেলে তাদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের আওতায় আনা হবে। রোজিনা বেগমের বিষয়টি আমরা দেখবো।