স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনা দুর্গাপুর সাবরেজিষ্ট্রার অফিসের কর্মচারী ও দলিল লেখকের উপর ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠেছে। এমন অর্থ লেনদেনের একটি ভিডিও শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকালের দিকে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাইল হয়।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, ওই অফিসের দলিল লেখক দেলোয়ার হোসেন চন্দন অফিস সহকারি (কেরানী) শাহানা বেগমকে টাকা প্রদান এবং টাকা গ্রহণ করে শাহানা বেগম গণনা করছেন। দলিল নিয়ে দুজনের দরকষাকষির কথোপকথনে একপর্যায়ে একজন আরেকজনকে টাকা ফেরত দেন এবং আরেকজন (দলিল লেখক) কেরানীকে বুঝানোর চেষ্টা করছেন।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ষ্ট্যালিন মোমেন ইবনে সাইদ প্রতিবেদককে জানান, অফিসের ভেতরে সাবরেজিষ্ট্রার, কেরানী ও নৈশ প্রহরী এই তিনজনের সিন্ডিকেট আছে। তাদের কথার বাহিরে কাজ করলেই বিনা কারণে চিঠি ধরিয়ে দিবে। সম্প্রতি কিছুদিন আগে ভুয়া জাতীয়পত্রের কথা বলে আমাদের সভাপতি মামুন তালুকদার ও যুগ্মসম্পাদক ইব্রাহিম খান দুজনকে কারণ দর্শনোর নোটিশ ধরিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে তারা নির্বাচন অফিস থেকে অনলাইন ও ভেরিফিকেশন কপি এনে দিলে এই আইডি দিয়েই দলিলও সম্পাদন করা হয়েছে। শুধুশুধু কারণ দর্শানোর পত্র দিল। এরকম নানাভাবে হয়রানি করে সাবরেজিষ্ট্রার ও কেরানী। শাহানা বেগম ঘুষের অর্থ এককভাবে ভোগ করেন না। সাবরেজিষ্ট্রারসহ সিন্ডিকেটে যারা আছে তারাই অর্থের ভাগ নিয়ে থাকেন। ভিডিওটি অফিসের স্টাফদের মধ্যে কেউ করেছে।
ঘুষের টাকা নাকি সরকারি টাকা প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তিনি (সাইদ) বলেন, এটা ঘুষের টাকা। আর দলিল প্রতি ইফিস/এনফিস ২৪০ টাকা সরকারিভাবে নির্ধারণ থাকলেও কেরানী নেন নূন্যতম দুই হাজার থেকে চার-পাঁচ হাজার টাকা। ভিডিওতে শাহানা ও চন্দন দুজনের কথায় স্পষ্টভাবে শুনবেন কেউ বলছে আঠারো’শ আবার কেউ বলছে দুই হাজার টাকা। একপর্যায়ে চন্দন সরকার বলছে এখানে আমার নিজের দলিল আছে। আবার কেরানী বলছে আপনি শূণ্যের ঘরটা ভেঙে (পূরণ) দেন- এধরনের কথোপকথন শোনা যাবে। কেরানী সাহেবের টাকা গণনার বান্ডেলে দেখবেন প্রায় সাত-আট হাজার টাকার মতো হবে। এছাড়া যেসব অসুস্থ জমি বিক্রেতা দলিল সম্পাদনে অফিসে আসতে পারেন না, এরকম একেকটা কমিশন দলিল বাবদ পনের’শ-ষোল’শ এরস্থলে ৪০-৬০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয় এই অফিসে।
এ বিষয়ে কেরানী শাহানা বেগম জানান, ২৪ হাজার টাকার নিচে দলিলের ফিস বাবদ নগদ নিয়ে থাকি। অন্যান্য দলিল থেকে নগদ ২৪০ টাকা ফিস আদায় করতে হয়। আমি কিসের টাকা গ্রহণ করছি। তিনি কিসের টাকা দিচ্ছেন আপনারাই (প্রতিবেদক) তদন্ত ও যাচাই করে দেখেন। অন্যদিকে দলিল লেখক দেলোয়ার হোসেন একবার ফোন ধরলেও পরিচয় দেওয়ার সাথে সংযোগ কেটে দেন। পরে আর ফোন ধরেননি তিনি।
দুর্গাপুরের সাবরেজিষ্ট্রার মাহবুবুর রহমান প্রতিবেদককে বলেন, এ ব্যাপারে কোন মতামত নেই। ভিডিওতে ওই দুজনের মতামত নেন। তারাই ভাল বলতে পারবে। এর বেশি কিছু বলেননি তিনি।