কোনো দল নির্বাচনে না আসলে কমিশনের কিছু করার নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। বুধবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মো. আলমগীর বলেন, উনারা (বিএনপি) তো এ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। কমিশন গঠনের পরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই তো আমাদের কাজ। প্রত্যেকটা দলের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হবে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো। এটিই আমাদের কাজ।
তিনি বলেন, একবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, উনার (বিএনপি) আসেনি। আরেকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, তবুও আসেনি। আমরা তৃতীয়বার চিঠি দিলাম, যদি তারা আসেন… আলোচনা করেন..। আর উনাদের রাজনৈতিক বক্তব্যের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই, সেটি চিঠিতেও বলা আছে।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, রাজনৈতিক দল তো স্বাধীন। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী- যেকোনো সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারেন। উনারা যদি মনে করেন যে, আমরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী, সেটি আমাদের বললে আমরা বসবো। যদি আমরা দেখি আলোচনা করা যেতে পারে, তাহলে আলোচনা করুক। আমাদের কিছু করণীয় থাকলে অবশ্যই শতভাগ চেষ্টা করবো তা করার জন্য।
নির্বাচনে আসা না আসা রাজনৈতিক দলের বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে জোর করে নির্বাচনে আনার আইনগত অধিকার ইসির দেওয়া হয়নি। কোনো দল কৌশলগত কারণে নির্বাচনে না আসলে কমিশনের কি কোনো ক্ষমতা আছে, তাকে জোর করে আনার? হ্যাঁ, কমিশনের যেটা আইনে আছে, সেটা হলো কোনো দল যদি পরপর দুবার নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে তাদের নিবন্ধন বাতিল করে দিতে পারে কমিশন। কিন্তু কোনো দল যদি নির্বাচনে না আসে, কমিশনের তো কোনো কিছু করার নেই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। বিষয়টি নজরে আনা হলে মো. আলমগীর বলেন, একটা রাজনৈতিক দলের নিজস্ব মতামত আছে। সেটা তো তারা করতেই পারেন। আমরা তো আমাদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আইনগতভাবে যা যা করা সম্ভব, তার কোনোটার চেষ্টার ত্রুটি করছি না।
বিএনপি নির্বাচনে না এলে অংশগ্রহণমূলক হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ৪০টি নিবন্ধিত দল আছে। এ বছর যারা নিবন্ধন পাবে, সবগুলো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সেটাকে আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলবো। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে যতোগুলো নির্বাচন হয়েছে, কোনো নির্বাচনেই সব দল অংশগ্রহণ করেনি। ওই নির্বাচনগুলো যে অংশগ্রহণমূলক হয়নি, এটা বলা যাবে না।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না, তা আইনগত বিষয় বলে জানিয়েছেন ইসি মো. আলমগীর। তিনি বলেন, এটি তো আইনগত বিষয়। আইন কী বলে? যোগ্যতা-অযোগ্যতা নির্ভর করবে, যখন উনি প্রার্থী হয়ে আবেদন করবেন তখন। যতোক্ষণ পর্যন্ত উনি প্রার্থী হওয়ার জন্য কমিশনে আবেদন না করছেন এবং কমিশন বিষয়টি নিয়ে বসে যাচাই করে না দেখছে, ততোক্ষণ পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব না। এ মুহূর্তে তো আগ বাড়িয়ে কিছু বলা যাবে না।
ইসি মো. আলমগীর বলেন, খসড়া প্রকাশের পর সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে ১৮৬টি আবেদন পড়েছে। এরমধ্যে ১২৬টা আপত্তি খসড়ার বিপক্ষে, ৬০টি পড়েছে বর্তমান সীমানা বহাল রাখার পক্ষে। পক্ষে থাকলে সেগুলোর শুনানির প্রয়োজন হবে না। বিপক্ষে বা পক্ষে-বিপক্ষে থাকলে সেগুলোর শুনানি হবে।
আরপিও সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, আরপিও কেবিনেটে (মন্ত্রিসভা) আছে। উনারা একটি সভা করেছেন। আরো সভা করবেন।
গেজেট প্রকাশের পরও নির্বাচন বাতিলের বিষয়টি থাকলে আপনাদের কী সুবিধা হবে, জানতে চাইলে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা যেটা দিয়েছি, সেটা থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা অনেক সহজ হবে।
দ্যা মেইল বিডি/এইচএসএস