স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
যশোরের ঝিকরগাছায় বখাটের ধাওয়া খেয়ে গতকাল সোমবার ফ্যানের সাথে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যাকারী অনি রায় (১৩)-এর লাশ নিয়ে শহরে মিছিল হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে যশোর সদর হাসপাতালে পোস্টমর্টেমের পর লাশ বাড়িতে নিয়ে আসার পর এলাকাবাসী ঝিকরগাছা বাজারে এ মিছিল করে।
এলাকাবাসীর দাবি,ঝিকরগাছার বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় যাতায়াতের পথে প্রচুর বখাটে উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সকল বখাটেদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। সেই সাথে অনির আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি জানানো হয়।
ঝিকরগাছা বদর উদ্দীন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ জানান,অনির আত্মহত্যার ঘটনায় আমি সহ আমার স্কুলের সকল স্টাফ খুবই মর্মাহত। অনিকে কারা উত্ত্যক্ত করেছে সেটা আমি জানিনা। তার সাথে কারোর প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিনা সেটাও আমার জানার বাইরে।
নিহত অনির মা কণিকা রায় জানান, বেশ আগে আমার মেয়ের সাথে একটি ছেলে সম্পর্ক ছিল এটা জানতাম। পরে সে সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল বলেও আমার মেয়ে আমাকে জানিয়েছিল।
নিহত অনির ভাই অর্ঘ্য রায় (১৮) জানান, ঘটনার দিন সোমবার সকালে তিন-চারটি ছেলে আমার বোনকে ধাওয়া করেছিল। গলায় ফাঁস দেয়ার পর আমার বোনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনজন ছাত্রের সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমার ধারণা আমার বোনের মৃত্যুর পিছনে এরা দায়ী থাকতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শী মোতাছিম বিল্লাহ প্রি ক্যাডেট স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী উর্মি জানায়, আমি স্কুলে যাওয়ার পথে দেখি অনিকে তিন-চারজন ছেলে ধাওয়া করছে। অনি দ্রুত পায়ে বাড়ির দিকে রওনা দিচ্ছে। এরপর আমি স্কুলে চলে যাই।
এ ব্যাপারে ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন ভক্ত জানান – অনির আত্মহত্যার ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পেলেই আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য অনি যশোরের ঝিকরগাছা হাসপাতাল রোডের মিস্ত্রি পাড়ার কুয়েত প্রবাসী গৌতম রায়ের মেয়ে।সে পার্শ্ববর্তী বদরউদ্দীন হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। সোমবার সকাল অনুমান সাড়ে দশটায় স্কুল থেকে কোচিং শেষে বাড়িতে ফেরার পথে বখাটেদের ধাওয়া-খাওয়ার শিকার হয়। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।