স্টাফ রিপোর্টার : জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি (ছবি) পুলিশ কর্মকর্তার অফিস কক্ষে টয়লেটের দরজার ওপরে স্থাপন করে অসম্মান প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে। সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরের দিকে স্থানীয় একজন (নাম না প্রকাশে) ওই পুলিশ কর্মকর্তার অফিস কক্ষে গেলে টয়লেটের দরজার ওপরে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো দেখতে পান। পরে তিনি ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলে প্রতিবেদককে প্রেরণ করেন।
তিনি প্রতিবেদককে বলেন, বাথরুমের দরজার ওপরে জাতির পিতার ছবি টানানো দেখে খারাপ লেগেছে। ওসি সাহেব এ থানায় যোগদান করেছেন অনেক দিন হয়ে গেল। তিনি (ওসি) কীভাবে টয়লেটের দরজার ওপরে জাতির পিতার ছবি টানানো অবস্থায় কার্য সম্পাদন করেন। উপজেলা পর্যায়ে পুলিশ প্রশাসনের একজন বড় কর্মকর্তা হয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি এ ধরণের অসম্মান আমাকে ব্যতিত ও হতবাক করেছেন। যা এক প্রকার অসম্মান ও অবমাননা সামিল বলে মনে করেন এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণও প্রায়ই এ থানাতে আসেন। তাদের চোখেও কি এই অসঙ্গতি দৃষ্টি গোচর হয়নি? এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম গত বছর এপ্রিলের ২১ তারিখ দুর্গাপুর থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। এরআগে তিনি একই জেলার পূর্বধলার থানার ওসির দায়িত্ব পালন করেছেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কৃষিবিদ সারোয়ার মুর্শেদ আকন্দকে (জাষ্টিস) বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন, যিনি আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম এক ভূখন্ড দিয়েছেন তাঁকে অবমূল্যায়ন করা রাষ্ট্রকে অস্বীকার করা। সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোনো সম্মানিত ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করলে তাঁকে সোফায় বসতে দিবো নাকি মেঝেতে বসতে দেবো তা কমনসেন্সের ব্যাপার। মেঝেতে বসালে অবশ্যই সম্মানজনক হবে না। জাতির পিতার ছবির পুলিশ কর্মকর্তা তার কক্ষে সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গাটা নির্বাচন করা উচিত ছিল। তবে সে (ওসি) দায়িত্বশলী কর্মকর্তা হতে পারেন না। আমি মনে করি তিনি পুলিশ প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন।
এ বিষয়ে ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, আমার যোগদানের আগে লাগানো ছবি। কোন সমস্যা হলে ছবির স্থান পরিবর্তন করে তা ঠিক করে দিচ্ছি।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমানকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি ছবি ও ভিডিও আছে কিনা প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান। পরে ভিডিও প্রেরণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার মন্তব্য নাই। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখা হবে জানান।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, বাথরুমের সামনে যদি ছবি টানানো হয়ে থাকে সেটা যথাযথ হয়নি। জাতির পিতার ছবির স্থান হবে সম্মানজনক জায়গায়। এটা হওয়া উচিত কর্মকর্তা (ওসি) যেদিকে বসেন চেয়ারের সোজাসোজি পেছনের দিকে জাতির পিতার ছবি থাকা উচিত। কিন্তু বাথরুমের দরজার ওপরে রাখা অশোভন ও নিয়ম অনুযায়ী হয়নি। বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপার মহোদয়কে অবগত করেন। আমিও বিষয়টি তাকে (পুলিশ সুপারকে) অবগত করব।