স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে যশোরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (২৬ মার্চ) দুপুরে যশোর শহরের ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দানের স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা ও সম্মাননা এর আগে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন”- শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, যশোর পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ।
এছাড়া বৃহত্তর যশোরের মুজিব বাহিনীর প্রধান আলী হোসেন মনি, ডেপুটি কমান্ডার রবিউল আলম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার নজরুল ইসলাম চাকলাদার, আইডিইবি যশোরের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, সদর উপজেলা সংসদ ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার নজরুল ইসলাম সরদার।
“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন”- শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি যশোর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, দেশ স্বাধীন হলেও শত্রু মুক্ত হয়নি। এ দেশে এখনো পাকিস্তানি দোষরা ঘাপটি মেরে রয়েছে। আগামি নির্বাচনের আগে তারা আস্তে আস্তে সংক্রিয় হচ্ছে। তাদের লক্ষ দেশের সকল অর্জন নষ্ট করা। বাংলাদেশের স্বার্থে, এদেশের মানুষের স্বার্থে বীর মুক্তিযোদ্ধারা আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনার পক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়বে। যারা দেশকে ভালোবাসে না, যারা দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়, তারাই বার বার স্বাধীনতার মাসকে কলঙ্কিত করতে চায়। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে সব অপশক্তি রুখে দিবে আওয়ামী লীগ।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘হঠাৎ করে নয় বরং বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সাধনা, পরিকল্পনা ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। হঠাৎ করে স্বাধীনতা আসেনি, করে রাষ্ট্র পাননি। হঠাৎ করে ভারতের সাহায্য আসেনি। আমরা যখন ভারত গিয়েছিলাম- আমাদের থাকা, খাওয়া, আমাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা, সবকিছু আমরা রেডিমেট পেয়েছিলাম। তার কারণ, আগে থাকতেই ওটা বঙ্গবন্ধু ব্যবস্থা করেছিলেন। আমাদের বাহিনীর মূলনেতা ছিলেন শেখ মুজিব। তিনি এগুলো আগে থেকেই ব্যবস্থা করেছিলেন। যার জন্য প্রত্যেকটি জায়গায় আমাদের ক্যাম্প ছিল, আমরা সবকিছু পেয়েছিলাম। আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এএইচএম মুযহারুল ইসলাম মন্টু বলেন, সারাদেশে দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন না হওয়াতে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডাররা প্রাক্তন হয়ে আছেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদগুলোতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। যদিও ১৩ মে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে কমান্ডার নিয়োগ হবে। সংসদগুলোর অচলাবস্থা দূর হবে। এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই নিবাচনের পরেই জাতীয় নির্বাচন। আমাদের নেতৃত্বেই প্রভাব ফেলবে জাতীয় নির্বাচনে।
উল্লেখ্য জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কালজয়ী সব গান পরিবেশিত হয়।