আনোয়ারা উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস দালাল বেষ্টিত হয়ে পড়েছে। দালাল ছাড়া মিলে না সেবা। জায়গা মালিকদের হয়রানি নিত্য দিনের কাজে পরিণত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে ওয়ারিশ বাদ দিয়ে জায়গার খতিয়ান সৃজন করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, সেটেলমেন্ট অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা দালালদের সাথে গোপনে যোগসূত্র রেখে এই অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছে। যার প্রমাণ সরূপ সেটেলমেন্ট অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ বের করলে দালালদের নিয়মিত কর্মকর্তাদের ধর্না দেওয়ার প্রমাণ বেড়িয়ে আসবে। বর্তমানে গোবাদিয়া মৌজার শুনানিকালে প্রচুর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ২ই মার্চ (বৃহস্পতিবার) দুই পক্ষের শুনানিকালে প্রকাশ্যেই মারামারি ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের পাঁচ জন আহত হন। এঘটনার ও কোন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাই সেটেলমেন্ট অফিস। দালালদের নিয়মিত সেটেলমেন্ট অফিসে গিয়ে এবং সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে দোকানে বসে বসে অথবা ফিল্ডে গিয়ে দালালরা জায়গার প্রকৃত মালিকদের হয়রানি করে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোবাদিয়া মৌজার এক ভুক্তভোগী জানান, আমাদের নামে আরএস, বিএস ও নামজারী সৃজনশীল খতিয়ান থাকা স্বত্তেও সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তারা আমাদের বিপক্ষের লোকদের থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে অভিযোগ গ্রহণ করে নিয়মিত হয়রানি করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আরেক ভুক্তভোগী মুহাম্মদ ছালাম ও মুহাম্মদ হাসান জানান, লোকমান নামের এক ব্যক্তিকে বাদী করে আমাদের নামে অভিযোগ পাঠায় সেটেলমেন্ট অফিস। পরবর্তীতে আমরা সেটেলমেন্ট অফিসের শুনানির দিন যোগাযোগ করলে বাদী অনুপস্থিত থাকে। পরে লোকমানের সাথে যোগাযোগ করলে লোকমান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি আপনাদের নামে কোন অভিযোগ করি নাই। অথচ বাদীর অজান্তে শুনানির দিন ধার্য্য ও শুনানি চালান সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তা জানান আপনাদের অভিযোগটি খারিজ করে দেওয়ার জন্য একটি লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি খারিজ হয়ে যাবে। আরেক ভুক্তভোগী নুর খান বলেন, আমাদের নামে একটি অভিযোগ এসেছিল। আমার মেজভাই সেটেলমেন্ট অফিসে কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করলে তাহা খারিজ হয়ে যায়। অনর্থক সেটেলমেন্ট অফিস আমাদেরকে হয়রানি করেছিল। এছাড়াও আবু তাহের, মুক্তার আহমদ, নুরুল আলম জানান, লোকমান নামের একজনকে বাদী করে আমাদেরকে বিবাদী করে একটি নোটিশ জারি করে সেটেলমেন্ট অফিস। শুনানির দিন আমরা উপস্থিত হলে বাদী লোকমান হাকিম বিবাদীদের নোটিশ জারীর কোন বিষয়ে অবগত নয় বলে জানান। বর্তমানে মৌজার কাজ চলাকালীন ও শুনানির সময়ে অতিরিক্ত হয়রানি থেকে রেহাই পেতে সেটেলমেন্ট অফিসের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ও কমপ্লেন অফিসারকে বদলী করে হয়রানি থেকে পরিত্রাণ পেতে ভূমিমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সেটেলমেন্ট অফিসের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার সুজন ত্রিপুরা দালালের বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে দালালদের নিয়মিত হাজিরা দেওয়ার তথ্য বেড়িয়ে আসবে জানালে তখন তিনি কমপ্লেন অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এ ব্যাপারে সেটেলমেন্ট অফিসের উপসহকারী অফিসার ডেবিট ত্রিপুরার সাথে যোগাযোগ করা তিনি অফিসে যোগাযোগ করার জন্য জানান।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version